ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

হারিকেন: অনলাইনে পড়াশোনার এক যুগান্তকারী প্লাটফর্ম
অনলাইন ডেস্ক
প্রতীকী ছবি

এইতো কিছুদিন আগেও নিজের বাসায় বসে শতশত মাইল দূরে অবস্থিত কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিংবা  দেশের একপ্রান্তে বসে আরেক প্রান্তে বসবাসরত কোন টিউটরের কাছে অনলাইনে-লাইভ ক্লাস করার কথা কেউ খুব একটা চিন্তা করত না। কিছু উৎসাহী শিক্ষার্থীরাই শুধু বিদেশী অনলাইন কোর্সগুলোতে অংশগ্রহণ করত কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারীতে সাধারণ শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতেও অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক হয়ে পড়েছে।

শিক্ষার্থীরা সেদিকে ঝুঁকছেও বেশ, আর হারিকেন তাদের ই-লার্নিং অভিজ্ঞতাকে আরো চমকপ্রদ, সহজ এবং সাশ্রয়ী করতে নিয়ে এসেছে দেশের প্রথম ওয়ান স্টপ লাইভ এডুকেশন প্লাটফর্ম। 

হারিকেন এমন এক প্লাটফর্ম যেটার মাধ্যমে দেশের সকল স্তরের টিউটরগণ সরাসরি-লাইভ ক্লাসের মাধ্যমে একসাথে দশজন পর্যন্ত শিক্ষার্থীকে টিউশন দিতে পারবে। বাংলাদেশে হারিকেনই এধরনের প্রথম প্লাটফর্ম যেখান থেকে শিক্ষার্থীরা একই জায়গা থেকে টিউটর বাছাই, মাসিক টিউশন ফি প্রদান এবং লাইভ ভিডিও ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে।  

চতুর্থ শ্রেণির ইংরেজি কিংবা নবম শ্রেণির পদার্থবিজ্ঞানের টিউশন অথবা গ্র্যাজুয়েটের কোন কোর্স, হারিকেনে আপনি সবই পাবেন। স্পোকেন ইংলিশ, কম্পিউটার প্রোগ্রামিংসহ দক্ষতা ভিত্তিক আরো বহু  কোর্স শিক্ষার্থীরা হারিকেনের মাধ্যমে করতে পারবে।

প্লাটফর্মটিতে টিউটরদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যের উল্লেখ থাকায় শিক্ষার্থীগণ সহজেই তাদের জন্য উপযুক্ত টিউটর বেছে নিতে পারে। তারপর বাসায় বসেই কোর্স-সংশ্লিষ্ট লাইভ ক্লাসরুমে অংশ নিয়ে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে, যেন সে সত্যিকার ক্লাসরুমেই ক্লাস করছে, কোন রেকর্ডেড ভিডিওর মাধ্যমে নয়! যদি কোণ শিক্ষার্থী দু’টি ক্লাস করার পর মনে করে যে তার পছন্দ করা টিউটর তার চাহিদা পূরণ করতে পারছে না তাহলে তৃতীয় ক্লাসের পূর্বেই হারিকেন দিচ্ছে ‘১০০% মানি ব্যাক গ্যারান্টি’। 

হারিকেনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, হারিকেনের অন্যতম উদ্দেশ্য হল, দেশে বিদ্যমান টিউটরদের ভৌগোলিক সীমারেখার বাধা সরিয়ে দেয়া, যাতে গ্রামে বসবাসরত কোন শিক্ষার্থীও অনায়াসে ঢাকাসহ অন্যান্য উন্নত শহরে বসবাসরত টিউটরদের কাছ থেকে টিউশন নিতে পারে। শুধু এতুটুকু করতে পারলেই কিন্তু প্রচলিত শিক্ষা-ব্যবস্থার মানোন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন সম্ভব! তাছাড়া শুধুমাত্র একজন শিক্ষার্থীকে পড়াতে একজন গৃহশিক্ষককে (বিশেষত ঢাকায় বসবাসরত) যানজটসহ প্রচুর ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়।

অন্যদিকে হারিকেন ব্যবহার করলে এসব ঝামেলাই থাকছে না, একবার ভাবুন কী পরিমাণ সময় ও অর্থ দুইই সাশ্রয় হবে, শিক্ষার্থীর টিউশন ফি-ও বহুলাংশে কমে যাবে। সেই সাথে সাধারণত সন্ধ্যার পর (অনেকসময় দিনের বেলায়ও) টিউশন দেওয়া ও নেওয়ার  ক্ষেত্রে নিরাপত্তাজনিত কারণে নারীদের পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে। হারিকেন ব্যবহারে এই সমস্যা পুরোপুরি দূর করা সম্ভব। এর একটা প্রতিফলন আমরা ইতিমধ্যেই দেখতে পাচ্ছি কারণ, হারিকেনে নিবন্ধিত ৩৫ শতাংশেরও বেশি টিউটর এবং প্রায় ৪২ শতাংশ শিক্ষার্থী নারী!

সাধারণত অনলাইন পড়াশোনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ব্যবস্থা হচ্ছে, পূর্বে থেকে রেকর্ড করা ভিডিও দিয়ে অনেক শিক্ষার্থীকে একটি বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া। শুধুমাত্র এতটুকুতেই অনেক শিক্ষার্থী লাভবান হয়েছে এটা বলা বাহুল্য। তবে বিভিন্ন গবেষণায় বলা হচ্ছে, অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থা আশানরূপ ফল না পাওয়ার অন্যতম কারণগুলো হলো রেকর্ড করা ভিডিও যেখানে প্রবলেম সলভিং খুব একটা গুরুত্ব পায় না, ইন্টার‌্যাকশনের অভাব, শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে তথ্য আদান প্রদান করতে না পারা, কোন প্রতিযোগিতা না থাকা, দিকনির্দেশনার অভাব ইত্যাদি। এসব কারণে বিশ্বব্যাপী অনলাইন  কোর্সে সাইন আপ করা ৪০ থেকে ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী কোর্স শেষ করার আগেই ঝরে যায়। 

হারিকেন সেদিক থেকে একেবারেই ভিন্ন! সকল ক্লাসই অনালাইনে-লাইভ অনুষ্ঠিত হয় যেখানে টিউটরগণ ক্লাসের সময় নির্দিষ্ট করে দেন এবং সম্পূর্ণ দিকনির্দেশনামূলক ক্লাস হয়। শিক্ষার মান বজায় রাখতে একই সময়ে সর্বাধিক দশজনের বেশি শিক্ষার্থী ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারে না। প্রযুক্তির সমন্বিত ব্যবহারে শিক্ষক যাচাই-বাছাই, অভিযোগ নিষ্পত্তি ইত্যাদি কার্যাবলী সম্পাদনের মাধ্যমে হারিকেন অনলাইন পড়াশোনাকে এনে দিয়েছে এক নতুন মাত্রা। 

জুন ২০২০-এর মাঝামাঝি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর হারিকেনে প্রায় ৬০০ টিউটর নিবন্ধন করেছেন ও ৩৫০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকের সাথে যুক্ত হয়েছে। নিবন্ধিত টিউটরদের মধ্যে পরমাণু বিজ্ঞানী, বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, ডাক্তার, প্রকৌশলী এবং দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট ও শিক্ষার্থী উল্লেখযোগ্য। টিউশন ফি প্রদান করার  ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড, বিকাশ, নগদসহ বিভিন্ন মাধ্যম যোগ করা হয়েছে নিরাপদ পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে, যা সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত। 

স্টার্ট-আপটির একজন মুখপাত্র হারিকেন সম্পর্কে বলেন, ব্যাপক গবেষণা ও চিন্তা-ভাবনার ভিত্তিতে আমরা হারিকেন ডিজাইন করেছি, যাতে শিক্ষা সহজলভ্য, কার্যকর ও সাশ্রয়ী হয় আর একইসাথে তা টিউটরদের জন্যও অর্থনৈতিকভাবে আরও লাভজনক হয়। হারিকেন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: www.harriken.education

বিডি প্রতিদিন/আল আমীন



এই পাতার আরো খবর