বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগে একাডেমিশিয়ান বেছে নেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। সোমবার বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে এই ওরিয়েন্টেশনের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। অনুষ্ঠানে নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল নিয়ে বরণ করেন অতিথিরা।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ছাদেকুল আরেফিনের সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও ডিন অধ্যাপক মু. মুহসীন উদ্দীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মো. আব্দুল কাইয়ুম ও প্রক্টর ড. মো. খোরশেদ আলম এবং ৩ জন নবীন শিক্ষার্থী।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে করে বলেন, ‘শ্রেণিকক্ষে পাঠ দান করানো হয়ে মাত্র ৫ ভাগ। বাকি ৯৫ ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক অন্যান্য সহশিক্ষার মাধ্যমে আত্মস্ত করতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কোনো প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ বছরের শিক্ষা কোর্স ২ বছরেও শেষ করা যায়। শিক্ষার্থীদের সব বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ এবং তাদের মেধা মনন বিকাশের জন্যই ৫ বছরব্যাপী কোর্স করানো হয়। এর মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী বিশ্ব সম্পর্কে সব ধরনের ধারনা পান।’
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগে একাডেমিশিয়ান বেছে নেয়া উচিত। অনেক সময় দেখা যায়, দলীয় বিবেচনায় উপাচার্য নিয়োগ করা হয়। তারা একাডেমিশিয়ান নয়। কেউ লবিং করে উপাচার্য নিয়োগ পায়। এটা দুর্ভাগ্যজনক। একজন একাডেমিশিয়ানকে ভিসি (নেতা) নিয়োগ দেয়া হলে তিনি তার চারপাশে একাডেমিশিয়ানদের শিক্ষক হিসেবে বেছে নেবেন। তার চারপাশে থাকবে গবেষক। তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অটোমেটিক ভালো চলবে। এ জন্য সত্যিকারের একাডেমিশিয়ানদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে আনার জন্য সরকার তথা রাজনীতিবিদদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।’ করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় বিগত দিনের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেন এ কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যে অর্থ প্রদান করে তা দিয়ে ১৫ দিন শিক্ষা কার্যক্রম চালানো সম্ভব। জনগণের দেয়া রাজস্বে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার খরচের যোগান হয়। তাই জনগণের প্রতি শিক্ষার্থীদের দায়বদ্ধতা থাকা উচিত।’
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা