ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

রামেকে ছাত্র নির্যাতনের ঘটনায় থানায় অভিযোগ রাবি প্রশাসনের
রাবি প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র গোলাম মোস্তফা শাহরিয়ারের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ছাত্র নির্যাতনের ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিচার চেয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শনিবার বিকাল ৫টার দিকে নগরীর রাজপাড়া থানায় এই অভিযোগপত্র জমা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম।

এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রার বলেন, শাহরিয়ারের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রামেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে থানায় একটি মামলা দায়েরের জন্য একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কেননা সেদিন শিক্ষার্থীরা আহত ছাত্রকে হাসপাতালে নিলে সঠিক সময়ে যথাযথ চিকিৎসা পায়নি। তাই তারা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ করে। কিন্তু হাসপাতালের স্টাফ ও সংশ্লিষ্টরা তাদের অবরুদ্ধ করলে ঝামেলা বাঁধে। এসময় হাসপাতালের স্টাফ, ডাক্তার ও সংশ্লিষ্টদের আঘাতে গুরুতর আহত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী। 

লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘গত ১৯ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী এস. জে. এম শাহরিয়ার শহীদ হবিবুর রহমান হলে উপরতলা থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। এ অবস্থায় তাকে জরুরি চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত শাহরিয়ারকে সেখানে কোননো প্রকার চিকিৎসা প্রদান করা হয়নি এবং তাকে আইসিইউ-তে না নিয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। ওয়ার্ডে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা অনেক ডাকাডাকির করলে, দায়িত্বরত চিকিৎসক ও নার্স আহত শাহরিয়ারের কাছে দেরিতে আসেন এবং নানা অযুহাতে চিকিৎসা প্রদানে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। ফলে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে নেওয়ার পর চিকিৎসায় বিলম্ব ও বিনা চিকিৎসায় শাহরিয়ারের মৃত্যু হয়। চিকিৎকেরা সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করলে শাহরিয়ারের বাঁচার সম্ভবনা ছিল বলে ছাত্রদের বিশ্বাস।’

এতে আরও বলা হয়েছে, ‘ডাক্তার/নার্সদের সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করা এবং তাদের দায়িত্বে ও কর্তব্যে অবহেলাজনিত কারণে শাহরিয়ারের মৃত্যু ঘটায় রাবি শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিকভাবেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে। এহেন অবস্থায় শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে। সেই সময় ৮ নম্বর ওয়ার্ড ও তার আশপাশের ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক/ ইন্টার্ন/ নার্স/ব্রাদার/আনসার ও তাদের উচ্ছৃঙ্খল সহযোগীরা ন্যাক্কারজনকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শোকার্ত শিক্ষার্থীদের অবরুদ্ধ করেন। তারা অকথ্য গালিগালাজ করেন এবং আকস্মিকভাবে হামলা চালান। তারা হামলার সময় লাঠি এবং শল্যচিকিৎসায় ব্যবহৃত ধারালো যন্ত্রসামগ্রী দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুমানিক শতাধিক শিক্ষার্থীকে গুরুতরভাবে আহত করেন। আহত শিক্ষার্থীদের অনেকে রাজশাহীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাই আহত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের জন্য মামলা এজহারভুক্তকরণে অনুরোধ করা হলো।’

এ ব্যাপারে রাজপাড়া থানার তদন্ত কর্মকর্তা মাহেদুল ইসলাম জানান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। এটা এজাহারভুক্ত হবে কি না সেটা ঊর্ধ্বতন কর্মকতাদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

 



এই পাতার আরো খবর