ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

স্মরণ সভায় বক্তারা
সাহসিকতা, নৈতিকতা, বলিষ্ঠতায় ডা. মালেক ছিলেন অনন্য
অনলাইন ডেস্ক
বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাবেক সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য ডা. এস. এ. মালেকের প্রয়াণে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মোজাফ্ফর আহমদ চৌধুরী মিলনায়তনে এ স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সাংবাদিক স্বদেশ রায়, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আ ব ম ফারুক, কলামিস্ট সুভাষ সিংহ রায়, প্রয়াত ডা. এস এ মালেকের কন্যা অবনি মাহবুবসহ দেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, পেশাজীবী এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের রাজনৈতিক দর্শন, সামাজিক দর্শন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ভাষা আন্দোলনের বাঙালি জাতীয়তাবাদ চেতনা, বঙ্গবন্ধুর মূল্যবোধ; এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ এবং চর্চা করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন ডা. মালেক। মানবিক মূল্যবোধ ও অসাম্প্রদায়িকতা চেতনা যখন সংকটের মুখে পড়ত, যখন নানাভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ভাষা আন্দোলনের চেতনা পরিপন্থী কোনো অপশক্তির উত্থান হতো; তখন তিনি উদ্যোগ নিয়ে সামাজিক শক্তিগুলোকে একত্রিত করতেন। সেই উদ্যোগের একটি ফলাফল হলো ‘বঙ্গবন্ধু পরিষদ’। তিনি একজন খ্যাতিমান কলামিস্ট এবং লেখক ছিলেন, বাংলা-ইংরেজি সমানভাবে লিখতেন। বঙ্গবন্ধুর দর্শন অর্থবহ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে টার্গেট করে লিখতেন ডা. মালেক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এ. কে. আজাদ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু পরিষদের শুরু থেকেই অন্যতম কর্ণধার ছিলেন ডা. মালেক। মার্শাল ল' চলাকালে আমরা ঢাবির মাত্র কয়েকজন লোক নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে শিক্ষক ক্লাবে অভ্যর্থনা জানিয়েছিলাম। আমাদের সঙ্গে ডা. মালেকও সম্পৃক্ত ছিলেন। আওয়ামী লীগের অত্যন্ত খারাপ সময়ে তিনি ছিলেন অগ্রগামী। তাই তার শূণ্যতাটা বেশি অনুভূত হয়। সাহসিকতা, নৈতিকতা, বলিষ্ঠতার জন্য ডা. মালেক ছিলেন অনন্য। এমনকি আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডেও যদি কখনও ভুল দেখেছেন, তখনই তা জনসম্মুখে বলতেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল এম আমিন উদ্দিন বলেন, ডা. এস. এ. মালেক সবসময় বলতেন পৃথিবীতে কোনো অপরাধের বিচার হবে না এই রকম আইন থাকতে পারে! তিনি ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স এর বিরুদ্ধে সবসময় কথা বলতেন। আমাদেরকেও কথা বলতে উৎসাহিত করতেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ধ্যান-ধারণা মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু পরিষদ গঠনের মাধ্যমে তিনি সেই ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছিলেন। এর ফলে আমাদের মাঝ থেকে বঙ্গবন্ধু ও তার আদর্শকে মুছে ফেলা সম্ভব হয়নি।

বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, ডা. এস. এ. মালেককে আমি ‘স্যার’ ডাকি। কারণ তিনি আমার আদর্শিক শিক্ষক ছিলেন। বঙ্গবন্ধু পরিষদের সবার আদর্শিক শিক্ষক তিনি। তিনি ছিলেন একজন লিভিং এনসাইক্লোপিডিয়া। অসুস্থ থাকলেও সব বিষয়ে অনর্গল কথা বলতেন।

ডা. এস. এ. মালেকের কন্যা অবনি মাহমুদ বাবার স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমার বাবা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক ছিলেন, আমাদেরকে ছোট বেলা থেকেই অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে বড় করেছেন। আমরা আসলে ভাগ্যবান যে তার মতো একজন বাবা পেয়েছি। বাবার স্মরণে এ রকম আয়োজনের জন্য তিনি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল



এই পাতার আরো খবর