ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামে বার বার শিক্ষার্থীদের হাতে লাঞ্ছিত হচ্ছেন শিক্ষকরা
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের কলেজগুলোতে একের পর এক শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটছে। কখনো ক্লাস চলাকালীন সময়ে দলবল নিয়ে ক্লাসে ঢুকছেন ছাত্রনেতারা, আবার কখনো পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করতে না দেয়ায় শিক্ষককে পিটিয়ে ট্রান্সপারের হুমকি দেয়ার অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। নিজেদের শিক্ষার্থীদের হাতে লাঞ্ছনা আর হুমকির শিকার অপমান অপদস্থতা মেনে নিতে পারছেন না শিক্ষকরা। আবার অনেক শিক্ষক লোকলজ্জার ভয়ে অনেক ঘটনা আনেন না জনসম্মুখেও।

সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) চট্টগ্রামের সভাপতি এডভোকেট আখতার কবির বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আসলে এখানে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা করতে বাধ্য হচ্ছেন। যে সময় যে সরকারই ক্ষমতায় থাকে তাদের ছাত্রসংগঠনগুলো এধরনের বেপরোয়া হয়ে যায়। অনেক সময় তাদের দলও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এতে করে শিক্ষকদের প্রতি তাদের যে আচরণ তাতে তাদের ছাত্র সংগঠনের যেমন ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে, তেমনিভাবে শিক্ষার্থীদের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণহচ্ছে। যা আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য মোটেও ভালো না।

চট্টগ্রাম মহিলা কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ আনোয়ারা আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ছিল তা এখন আর নাই। এর জন্য যেমন রাজনৈতিক নেতারা দায়ী তেমনি শিক্ষকরাও দায়ী। শিক্ষকরা যে ছাত্রদের শাসন করবে তা কোনভাবে তারা মেনে নিতে পারছে না। এতে করে শিক্ষকদের ছাত্রদের সাথে কৌশলী আচরণ করতে হবে।

চলতি মাসের ৭ ফেব্রুয়ারি নগরীর ওমরগণি এমইএস কলেজের একাদশ শ্রেণীর ক্লাস চলাকালীন সময়ে বক্তব্য দিতে না দেয়ায় অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ববি বড়ুয়াকে ক্লাসে ঢুকে লাঞ্চিত করে বহিরাগত শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। যার নেতৃত্বে ছিলেন ডাবলমুরিং থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হায়দার। সে সময় অধ্যক্ষ আ.ন.ম সরওয়াল আলমের কক্ষে নিয়ে মাফ চেয়ে পার পেয়ে যান অভিযুক্তরা। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গতকাল ১২ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম সরকারি হাজী মহসিন কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মুজাহিদুল ইসলামকে পিটিয়ে ট্রান্সফার করার হুমকি দেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কাজী নাঈম। পরবর্তী সময়ে কলেজ অধ্যক্ষ কামরুল ইসলাম অভিযুক্ত কাজী নাঈমনসহ তার অনুসারী নিজের কক্ষে ডেকে আনেন। পরে তারা শিক্ষক মুজাহিদুল ইসলামের কাছে মৌখিক ক্ষমা চেয়ে পার পেয়ে যান।

মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কাজী নাঈম বলেন, আসলে ওই শিক্ষক পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কয়েকজনকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বের করে দেন। যার কারণে তারা আমার কাছে অভিযোগ নিয়ে আসলে আমি প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে যেতে বলি। কেন তারা প্রিন্সিপালের কাছে গিয়ে নালিশ করেছে, তার কারণে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছাত্রলীগের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার জন্য এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন।  

মহসিন কলেজের অধ্যক্ষ কামরুল ইসলাম বলেন, আসলে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরবর্তীতে অভিযুক্তরা এসে মুজাহিদুল ইসলামের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। তিনিও ক্ষমা করে দিয়েছেন। এটা সামান্য বিষয়, তেমন কিছু না।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল



এই পাতার আরো খবর