ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

জাবিতে ফের সহস্রাধিক গাছ কেটে ভবন নির্মাণের উদ্যোগ
জাবি প্রতিনিধি

কড়ই, আকাশি, শাল ও গজারিসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় সহস্রাধিক গাছ কেটে একাডেমিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এমন সিদ্ধান্তের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, ২০১৮ সালে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সময়ে অধিকতর উন্নয়নের জন্য ১ হাজার ৪৪৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন করে একনেক। প্রকল্পের প্রথম ধাপে প্রায় সাড়ে ৩ শতাধিক গাছ কাটা হয়। প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে আবারও হাজারখানেক গাছ কাটা পড়ে। এভাবে নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে দিন দিন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হারাচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণির বাস্তুসংস্থান। শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানালেও থামছে না গাছ কাটা। 

এরই মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র ও মীর মশাররফ হোসেন হলের মধ্যবর্তী ‘সুন্দরবন’ এলাকায় ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) একাডেমিক ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম। 

ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হলে ওই এলাকার প্রায় সহস্রাধিক ছোট বড় গাছ কাটা পড়বে। পরিবেশবাদী ও সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যানের তোয়াক্কা না করে অপরিকল্পিতভাবে এই ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন।

গাছ কেটে অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ বন্ধ এবং চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের দাবিতে বুধবার মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। 

মানববন্ধনে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ বলেন, '২০১৮ সাল থেকে প্রশাসন উন্নয়নের নামে গাছ কাটার অভিযানে নেমেছে। মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন না করে অপরিকল্পিতভাবে আইবিএ ভবনের জন্য ক্যাম্পাসের সবচেয়ে বেশি বনভূমি বেষ্টিত ‘সুন্দরবন’ এলাকাকে বেছে নিয়েছে। আমরা চাই আরো একাডেমিক ভবন হোক। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে গাছ কেটে নির্মাণকাজ বন্ধ না করলে আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, 'নির্দিষ্ট একটি বিভাগের নিজস্ব ভবন করাটা একধরনের বিলাসিতা ছাড়া কিছুই নয়। বন উজাড় করে অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ কোনভাবে কাম্য নয়। যেভাবে শুরু হয়েছে, যেকোন বিভাগ ভবন নির্মাণ করতে চাইবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করে তারপর ভবন নির্মাণ করা উচিত।' 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আইবিএ ভবন নির্মাণের সাথে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের কোনো সম্পর্ক নেই। ভবনটি ওই বিভাগের নিজস্ব অর্থায়নে করা হচ্ছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে যেসব কাজ চলছে সেটাকে আমি ঠিক মাস্টারপ্ল্যান বলবো না। টিএসসির পাশের জায়গায় ভবন নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে সিন্ডিকেট। এক্ষেত্রে আমার কোনো হাত নেই।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত



এই পাতার আরো খবর