ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

ঢাবির ৪ শিক্ষার্থীকে মারধর করে হল ছাড়া করার অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীবৃন্দ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হলে চার শিক্ষার্থীকে মারধর করে জোরপূর্বক মুচলেকা নিয়ে হল থেকে বের দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মঙ্গলবার বিকালে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিয়াম রহমানের কক্ষে তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত প্রায় ৫ ঘণ্টা তাদের নির্যাতন করা হয়। পরে মুচলেকা দেওয়ার শর্তে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় এবং হলে থেকে বের করে দেওয়া হয়। 

বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

নির্যাতনের শিকার চার শিক্ষার্থী হলো- ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের আলম বাদশা, একই বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের লুতফর রহমান, আরবি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আশিকুর রহমান ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আল আমিন।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, মাস্টারদা সূর্যসেন হলের ৫৩২ নম্বর কক্ষে তারা ৬ জন থাকেন। সেখানে সুমন আহমেদ নামে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী অবৈধভাবে থাকতেন। সম্প্রতি তাকে হল থেকে বের হয়ে যেতে বললে সুমন সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিয়াম রহমানের কাছে অভিযোগ দেন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আহাদ তাদেরকে সিয়াম রহমানের ৪৫০ নম্বর কক্ষে ডেকে নেন। 

লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা সেখানে গিয়ে দেখতে পাই, সিয়াম রহমান এবং সুমন আহমেদের সাথে লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান করছিল হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হামিদ কারজাই, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ জামান অভি, উপ আইন সম্পাদক মুহাম্মদ তালহা, আপ্যায়ন সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম নীরব। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা রুমে প্রবেশের সাথে সাথে আমাদের মোবাইল কেড়ে নেয়। আমাদের মোবাইল চেক করতে থাকে। মোবাইলে আশানুরূপ কিছু না পেয়ে উপর্যুপরি কিল, ঘুষি ও লাথি দিতে থাকে আমাদের চারজনকে। সুমন আহমেদকে রুম থেকে চলে যেতে বলায় আমরা আর হলে থাকতে পারব না বলে সাফ জানিয়ে দেয়।

সিয়াম রহমান জোরপূর্বক তাদের মুচলেকা নিয়েছে অভিযোগ করে চার শিক্ষার্থী বলেন, হলে দেখলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন সিয়াম রহমান। ক্রিকেট স্ট্যাম্প নিয়ে পেটাতে পেটাতে আমাদেরকে ৫ ঘণ্টা পর রাত ৮টার সময় বের করে দেয়। আমরা ভয়ে হলে আর অবস্থান করিনি। রাতেই আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিই। তারা বলেন, আমাদের কাছ থেকে আলাদা চারটা মুচলেকা নেয় এই বলে যে, আমরা বর্তমানে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নই। সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে একমত নই। অন্যায়ভাবে সুমন আহমেদকে রুম থেকে বের করেছি। হল থেকে স্বেচ্ছায় বের হয়ে যাব। 

অভিযোগের বিষয়ে সিয়াম রহমান বলেন, একজন শিক্ষার্থীকে তারা হল থেকে বের করে দিতে পারে না। ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে এর আগেও তারা হল থেকে একজন বের করে দিয়েছে। এ ঘটনায় আমি তাদের মীমাংসার জন্য আমরা রুমে ডেকে এনেছিলাম। পরে জানতে পারলাম তারা আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ফেসবুকে বিদ্রুপাত্মক পোস্ট দিয়েছে, পদ্মা সেতু নিয়ে কিছু গুজব সৃষ্টিকারী পোস্ট দিয়েছে। সেগুলো আবার বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার করেছে। এজন্য তারা আমার কাছে মাফ চায় এবং মুচলেকা দিয়ে হল ছেড়ে দিতে সিদ্ধান্ত নেয়। সিয়াম রহমান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে রাজনীতি করেন।  বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছেন সাদ্দাম।

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল 



এই পাতার আরো খবর