ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

রাবিতে সাংবাদিককে ছাত্রলীগের মারধর, শাস্তির দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
রাবি প্রতিনিধি
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলে মধ্যরাতে উচ্চ শব্দে গান বাজাতে নিষেধ করায় সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে ক্যাম্পাসের তিন সাংবাদিক সংগঠন। 

এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ঘটনাটি শুনেই হল প্রশাসনকে ডেকেছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছি। 

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রায়হান ইসলাম। অন্যদিকে অভিযুক্ত হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি আল আমিন আকাশ এবং ছাত্রলীগকর্মী সম্রাট, ইমরান, নাফিজ ও আমির হামজা। তারা সবাই আকাশের অনুসারী কিন্তু ক্যাম্পাস রাজনীতিতে সক্রিয় নন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত দেড়টার দিকে শহীদ হবিবুর রহমান হলের ২১৬ নম্বর কক্ষে বিকট আওয়াজে গানবাজনা, লাফালাফি ও হইচই হচ্ছিল। শব্দ সহ্য করতে না পেরে উপরতলার ৩১৫ নম্বর কক্ষ থেকে আবাসিক শিক্ষার্থী শাহাদত হোসেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মঞ্জুরুল ইসলামকে নিয়ে নিচ তলায় আসেন। তখন ২১৬ নম্বর রুম থেকে হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি আকাশকে দেখে গান কোথায় বাজে তা জিজ্ঞেস করেন। এ কথা জিজ্ঞেস করতেই শাহাদতের ওপর চড়াও হন এবং তুই-তুকারি শুরু করেন আকাশ। উভয়ের মধ্যে তর্ক হয়। তখন ২১৬ নম্বর কক্ষ থেকে বের হন ইমরান ও সম্রাট। তর্কের এক পর্যায়ে শাহাদতের কানে সজোরে থাপ্পড় দেন ইমরান। তখন পাশের কক্ষের (২১৭ নম্বর) রায়হান ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে উচ্চশব্দে গান বাজাতে নিষেধ করেন এবং উভয়পক্ষকে থামানোর চেষ্টা করেন। তখন তাকেও ধাক্কা দেন ইমরান ও সম্রাট। একপর্যায়ে ২১০ নম্বর কক্ষের দিকে গিয়ে অন্য সহযোগীদের ডাকেন আকাশ। তখন ২০৮ নম্বর কক্ষের নাজিম ও আমির হামজাসহ কয়েকজন মিলে অতর্কিতভাবে রায়হানকে মারধর করেন। এতে তিনি মাথায় ও চোখে আঘাত পান। এ ঘটনায় নিজেদের নিরাপত্তা ও অভিযুক্তদের শাস্তি দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।

অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা আকাশ জানান, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কোন মারধরের ঘটনা ঘটেনি। অন্যরাও অভিযোগ অস্বীকার করেন। 

গণমাধ্যম কর্মীর ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে, ক্যাম্পাসের তিন সাংবাদিক সংগঠন। তদন্ত সাপেক্ষে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের হল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং মারধরের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আল্টিমেটাম দেন তারা। 

এ ব্যাপারে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিককের গায়ে হাত তোলা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এটা কোন ছাত্রলীগের দায়িত্বশীলের কাজ নয়। অভিযোগ প্রমাণ হলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

এদিকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন। এতে হবিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষক ড. গৌতম দত্তকে আহ্বায়ক এবং ছালেকুজ্জামান, ড. ছাইফুল ইসলাম, ড. আরমান হোসেন ও ড. আশিক শাহরিয়ার। 

এ ব্যাপারে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। কালকে সকলকে ডেকে ঘটনার বিবরণ শুনে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর