রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ চেয়ে আটজন ডিসকলেজিয়েট হওয়া শিক্ষার্থী অনশনে করেছেন। এ ঘটনায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
অনশনকারী শিক্ষার্থীরা হলেন মেহেদী হাসান, ফয়সাল আহমেদ, তানভির, জয়শ্রী, রিতু পর্না, ফারজানা ইয়াসমিন, ফাতিমা আফরিন মিম ও অনামিকা। তারা সবাই চারুকলা অনুষদের গ্রাফিকস ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের কারুশিল্প ডিসিপ্লিনের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক মনির উদ্দিন আহম্মেদ ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ ব্যবহারিক ক্লাসে উপস্থিতি কম দেখিয়ে ৮ জনকে ডিস-কলেজিয়েট করেছেন। ডিসিপ্লিনে চারজন শিক্ষক থাকার পরেও তিনি একাই ৬টি ব্যবহারিক কোর্স নেন। বিভিন্ন কর্মচারী ও জুনিয়র শিক্ষার্থীদের থেকে শুনে তার ভিত্তিতে এটেন্ডেন্স দিতেন। ফলে শিক্ষার্থীরা অনেকেই ক্লাসে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও অনুপস্থিত হিসেবে চিহ্নিত হয়।
অনশনকালে মেহেদী হাসান বলেন, পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে আমরা অনশনে বসেছি। আমাদের শ্রেণি শিক্ষক মনির উদ্দিন দিনের পর দিন আমাদের ওপর মানসিক অত্যাচার করেছেন। তিনি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমাদের ডিস-কলেজিয়েট করেছেন। আমাদের সকাল সাড়ে ৯টায় ক্লাসে আসতে বললেও তিনি নিজে দুপুরে বিভাগে আসেন। যারা দেরিতে ক্লাসে আসেন তাদের উপস্থিতি দেন না।
ফাতিমা আফরিন মিম বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে ডিসকলেজিয়েট করে আমাদের জীবনকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও সমাধান চাই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী অধ্যাপক মনির উদ্দিন আহাম্মেদ বলেন, এটা শুধু আমার একার সিদ্ধান্ত না। অ্যাকাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্ত। আমি নিয়মিত ক্লাস নিয়েছি।
আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি হতে কারুশিল্প ডিসিপ্লিনের মাস্টার্সের পরীক্ষা শুরু কথা ছিল। তবে ক্লাসে উপস্থিতির ওপর ভিত্তি করে ১২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২ জন কলেজিয়েট, ২ জন নন-কলেজিয়েট ও ৮ জন শিক্ষার্থী ডিসকলেজিয়েট হন। অর্ডিনেন্স অনুসারে, ক্লাসে ৬০ ভাগের কম উপস্থিতি ডিসকলেজিয়েট হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
সন্ধ্যায় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশনে বসার পর উপাচার্য তাদের বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন। পরে বিভাগের সভাপতি সেখানে উপস্থিত হয়ে পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা দেন।
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষাটি স্থগিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল