ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগের হুঁশিয়ারি
তুচ্ছ ঘটনায় রাবিতে ভাঙচুর, অভিযুক্তদের হল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত
রাবি প্রতিনিধি

তুচ্ছ ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নবাব আব্দুল লতিফ হলে ভাঙচুর ও প্রাধ্যক্ষকে অপদস্তের ঘটনায় অভিযুক্তদের হল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। মঙ্গলবার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান।

এ প্রাধ্যক্ষ বলেন, প্রাধ্যক্ষ পরিষদ সভায় হলে ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্তদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। শৃঙ্খলা কমিটিতে হল ছাত্রলীগের নেতা তৌহিদ, মাসুদ ও ইমরানকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে।

হলসূত্রে জানা গেছে, নবাব আব্দুল লতিফ হলের আবাসিক শিক্ষক ড. অনিক কৃষ্ণ কর্মকারকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সদস্য হিসেবে আছেন আবাসিক শিক্ষক ড. আব্দুল কাদের, ড. মেসবাহুস সালেহীন ও হল সুপারভাইজার ইলিয়াস হোসেন। তিন কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

এর আগে, সোমবার দুপুরে হলে ডাইনিংয়ের খাবারে সিগারেটের অংশ পাওয়াকে কেন্দ্র করে প্রাধ্যক্ষ ও অতিথি কক্ষে ভাঙচুর চালায় শিক্ষার্থীরা। ঘটনা জেনে হলে আসলে প্রাধ্যক্ষকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি আন্দোলনকারীরা। হল গেটে লাল কাপড় ঝুলিয়ে প্রাধ্যক্ষকে লালকার্ড দেখিয়ে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা।

প্রাধ্যক্ষের অভিযোগ, হল ছাত্রলীগের নেতা তৌহিদ, ইমরান, মামুদ ও তাদের অনুসারীরা তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও হেনস্তা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তহল টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা তৌহিদ ও মাসুদ প্রায় ৩০ জনের পোশাক চান। কিন্তু হল প্রশাসনের বাছাইকৃত খেলোয়াড়ের বাইরে অন্য কাউকে পোশাক দিতে অসম্মতি জানালে পরিকল্পিতভাবে হলে এ ভাঙচুর চালায় তারা।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগের এই নেতারা। অভিযুক্ত তৌহিদ বলেন, কোনো ঘটনায় আমি সম্পৃক্ত নই। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি ভিন্নখাতে নিতেই ছাত্রলীগের নামে এমন অভিযোগ তুলছেন প্রাধ্যক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদের বিরুদ্ধে পূর্বেও হলে সিট দখল ও মারধরসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগে তাকে হল থেকে বহিষ্কারও করা হয়। এছাড়া শহিদ হবিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধেও কেন্টিনের খাবারে তেলাপোকা ফেলে আন্দোলনের হুমকি দিয়ে কয়েক বছর ফ্রি খাওয়ার অভিযোগ ওঠে।

এদিকে মঙ্গলবার আবাসিক হলে ভাঙচুর ও প্রাধ্যক্ষ হেনস্তা এবং অন্যান্য হলগুলোতে চলমান সমস্যা নিয়ে সভা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ পরিষদ। এতে উপ-উপাচার্যদ্বয় অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম ও অধ্যাপক হুমায়ুন কবির, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ ও প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক সহ হল প্রাধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলেন।

সভা সূত্রে জানা গেছে, হলগুলোতে সিট দখল, প্রাধ্যক্ষদের কাজে বাধা ও হেনস্তা এবং বিভিন্ন হলের প্রধ্যক্ষদের ছবিতে রেডক্রস দিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বয়কটের ডাক দানকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়গুলো সভায় আলোচনা হয়েছে। বিষয়গুলো আমলে নিয়ে অবিলম্বে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া না হলে একযোগে সকল প্রাধ্যক্ষ পদত্যাগের হুঁশিয়ারি দেন।

এ ব্যাপারে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, হলের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। প্রাধ্যক্ষদের অভিযোগগুলো জেনেছি। এ বিষয়ে দ্রুতই কার্যকরী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর