ঢাকা, রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরলেও ফিরবেন না শিক্ষার্থীরা
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

সার্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলন চলমান রয়েছে। আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সকল প্রকার একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ থেকে বিরত রয়েছেন শিক্ষকরা। এর ফলে অচল অবস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

এদিকে কোটা বিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি ও পদযাত্রায় অংশ নিচ্ছেন। এবার তারাও  ক্লাস পরীক্ষাসহ সকল একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করার ঘোষণা দিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষকরা ক্লাস ফিরলেও শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফিরবে না। শিক্ষকদের উচিত শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে আন্দোলনে নামা। 

শনিবার (৬ জুলাই) পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ,একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম,ক্রিমিনোলজি বিভাগ, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট,ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, দর্শন বিভাগ, ইংরেজি বিভাগ, উর্দু বিভাগ, ফার্সি বিভাগ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, রসায়ন বিভাগ, ফারসি বিভাগসহ সিংহভাগ বিভাগ ও ইন্সটিটিউটের একাধিক ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সকল একাডেমিক কার্যক্রম বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন। কোটা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফিরবেন না বলে জানান তারা। 

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের সর্বাত্মক কর্মবিরতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান গ্রন্থাগার ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার বন্ধ রয়েছে। যা নিয়ে প্রতিবাদ করছেন শিক্ষার্থীরা।

শনিবার শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালনের সময় শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষদের আন্দোলনের সাথে আমরা সংহতি প্রকাশ করছি তবে আমরা বলেছিলাম যেন বিজ্ঞান গ্রন্থাগার ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার খুলে দেওয়া হয়, নাহলে আমরা শীঘ্রই গ্রন্থাগারের তালা ভেঙে ঢুকে যাব।

এর আগে গত ১ জুলাই শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার বন্ধ পেয়ে ইটপাটকেল ছুঁড়ে মারেন। যার ফলে গ্রন্থাগারের ক্ষতি সাধিত হয়। কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আন্দোলন করছেন তবে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা তারা কীভাবে বন্ধ করে দেয়? ক্লাস-পরীক্ষাসহ দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে তাই বলে লাইব্রেরি কেন বন্ধ হবে, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা এমনিতেই নেই। এর ফলে আন্দোলন প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলেও মন্তব্য করেন অনেকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা বলেন, এই আন্দোলন শিক্ষার্থীদের জন্যই। ভবিষ্যতে তারাই শিক্ষক হবে। সর্বাত্মক সকল প্রকার প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক কাজ বন্ধের অংশ হিসেবে বন্ধ রয়েছে। আন্দোলনে সর্বাত্মকতা বন্ধ রাখার জন্য এটা করা হয়েছে। ছাত্রদের জন্যই এ আন্দোলন, আগামীতে তারাই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হবে। আন্দোলনের জন্য আমাদের কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আমরা বারবার বলেছি, কঠিন সিদ্ধান্তে যেতে বাধ্য করবেন না। আমাকে প্রশ্ন না করে অর্থ মন্ত্রণালয়কে প্রশ্ন করুন কেন ছাত্ররা লাইব্রেরি ঢুকতে পারছে না, শিক্ষকদের লাইব্রেরি না খোলার মত অবস্থায় যেতে হলো।

উল্লেখ্য, শুক্র, শনি দুইদিন অবস্থান কর্মসূচি বন্ধ রাখার পর আবারও কলাভবনের মূল ফটকে অবস্থান নেবেন শিক্ষকরা।পেনশন ইস্যুতে গত বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সাথে বৈঠকের কথা থাকলেও রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ততার অজুহাতে তা স্থগিত করেন ওবায়দুল কাদের। পরবর্তী বৈঠক কবে হতে পারে সে বিষয়ে এখনও কোনো কিছু জানানো হয়নি।

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর