জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশের ভিশন বাস্তবায়ন আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এজন্য শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক পাঠদান নিশ্চিত করা হচ্ছে। দেশব্যাপী শিক্ষক প্রশিক্ষণ বিস্তৃত করা হয়েছে এবং গবেষণাকে অগ্রাধিকার দিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে।
শনিবার গাজীপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসের সিনেট হলে ২৬তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে এসব কথা বলেন উপাচার্য। তিনি সিনেটের এ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। বাজেট ঘোষণা করেন ট্রেজারার প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদার। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য ২০৯৭ কোটি ৩১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়, যার মধ্যে রাজস্ব বাজেটে ৭২১ কোটি ৬৪ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য ১৩৭৫ কোটি ৬৬ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সিনেট কর্তৃক এ বাজেট অনুমোদিত হয়েছে। এছাড়া ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের ৫৬৪ কোটি ৫০ লক্ষ ২৬ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেটও অনুমোদিত হয়েছে।
সিনেট চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের সামনে একমাত্র পথ—সঠিক পদক্ষেপ ও পরিচর্যার মাধ্যমে উৎকৃষ্ট শিক্ষা, দর্শন এবং সময়োপযোগী মানবসম্পদ সৃষ্টি করা। এজন্য প্রয়োজন শ্রেণিকক্ষে মানসম্মত শিক্ষক, শিক্ষকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ, উপযুক্ত পরিবেশ, পরিমার্জিত কারিকুলাম, যুগোপযোগী বিষয়সমূহ এবং নতুন দক্ষতাভিত্তিক কোর্স প্রবর্তন। এছাড়া উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা এবং বিকল্প দক্ষতাভিত্তিক জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলাও গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশকে বিশ্বে আদর্শগত নেতৃত্বের জায়গায় দেখতে চাই। আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নকে বাস্তবায়নে অদম্য গতি, সাহসিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে এগিয়ে যেতে চাই। ‘স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস’ অবশ্য পাঠ্য করে আমরা দেশপ্রেমিক জনগোষ্ঠী তৈরির দৃঢ়তা রেখেছি এবং আইসিটি কোর্সকে অবশ্য পাঠ্য করে শিক্ষার্থীদের যোগ্যতর মানুষ হিসেবে তৈরি করতে চাই।
সিনেট অধিবেশনে বিভিন্ন পরামর্শ ও দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ. বি. তাজুল ইসলাম এমপি, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এমপি, সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. মোতাহার হোসেন এমপি, মুহাম্মদ শফিকুর রহমান এমপি, এস. এম. কামাল হোসেন এমপি, সাজ্জাদুল হাসান এমপি, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক, ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম, পিএসসির সাবেক সদস্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবীর, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক শাহজাহান মিয়া, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তার, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবিরসহ ২১ জন সিনেট সদস্য।
এছাড়া সিনেট অধিবেশনে বিভাগীয় কমিশনারবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষাবিদসহ ৬৪ জন সিনেট সদস্য এবং ২ জন আমন্ত্রিত সিন্ডিকেট সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
সিনেট অধিবেশনের শুরুতেই জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর সিনেট সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের যে-সব শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের উদ্দেশে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তাদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। উপাচার্য ড. মো. মশিউর রহমান ধন্যবাদ জানিয়ে সিনেট অধিবেশন সমাপ্ত ঘোষণা করেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল