ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি বন্ধসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষকদের থেকে উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভাস্কর্য চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এর আগে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে কলা ভবন ও বিজ্ঞান অনুষদ প্রদক্ষিণ করে ভাস্কর্য চত্বরে এসে শেষ হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা ‘ভাড়াটিয়া ভিসি আসলে, গেইটে তালা ঝুলবে,’ ‘জবি থেকে ভিসি চাই, দিতে হবে-দিতে হবে' সহ বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

সমাবেশে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন নির্দলীয় উপাচার্য দিতে হবে। যে কি-না সকল ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করতে মেরুদণ্ড সোজা করে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে সক্ষম হবেন। জবির বাহিরে থেকে উপাচার্য আসলে প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হবে। এসময় বহিরাগত উপাচার্যকে কোন ধরনের সহযোগিতা না করারও ঘোষণা দেন তারা। 

আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান সাদী বলেন, শিক্ষকদের শুধু বেতন দেয়া হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ধরনের অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হয়নি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন চলেছে। তাদের কিছু নিয়ম-কানুনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি। এখন আমরা নিজেরা নিজেদের বিশ্বিবদ্যালয়ের উন্নয়ন করতে চাই। আমাদের নিজেদের বিশ্বিবদ্যালয়ের একটা কালচার আছে, সেই কালচার ও নিয়মকানুনই চলবে। ঢাবির কালচার ও নিয়মকানুন দিয়ে জগন্নাথ আর চলবে না।

ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বেলাল হোসেন বলেন, 'প্রায় বিশ বছর পর আজও বলতে হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন কাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। একটা ভবন ছাড়া কিছুি হয়নি। না হওয়ার পেছনের কারণ হলো- নেতৃত্বের সংকট ও তথাকথিত ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্তৃত্ব। বাহির থেকে এসে সবাই রুটিন দায়িত্ব পালন করে গেছে। রুটিন দায়িত্ব পালন করে বিশ্বিবদ্যালয় পরিচালনা করা যায় না। ঢাকার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরে এই জগন্নাথে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, জবিতে এক ঝাঁক যোগ্য শিক্ষক সমাজ আছে, কিন্তু বারবার সেই শিক্ষকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। এখন থেকে সকল উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, প্রক্টরসহ প্রশাসনিক পদে নিজস্ব শিক্ষকদের নিয়োগ দিতে হবে। সকল শিক্ষক নিয়োগ জবি থেকে হতে হবে। আমরা আর ভাড়াতে ভিসি (উপাচার্য) চাই না, কোন ভাড়াতে শিক্ষক-কর্মকর্তা চাই না। 

এ শিক্ষার্থী আরও বলেন, 'শিক্ষার্থীদের অধিকারের পক্ষে কথা বলতে সক্ষম, এরকম যোগ্যতা সম্পন্ন নির্দলীয় ভিসি (উপাচার্য) চাই। কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সেকশন অফিসার পর্যন্ত সকল পদে জবি শিক্ষার্থীদের নিয়োগ দিতে হবে।'

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত