অফিস সময় শেষ হওয়ার আগে শিক্ষার্থীদের বাসে বাসায় ফেরা নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কর্মকর্তাদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এসময় অভিযুক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের শাখা কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন ভুক্তভোগী রেজিস্ট্রার অফিসের শাখা কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেনকে চড়-থাপ্পড় এবং লাথি মারেন ৷ সেখানে থাকা অন্যান্য কর্মকর্তারা পরিস্থিতি শান্ত করেন।
বুধবার (২৮ আগস্ট) বেলা আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় প্রশাসন ভবন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মারামারির বিষয়টি কখনোই উচিত হয়নি বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
সরেজমিন দেখা যায়, গত ২৫ আগস্ট অফিস সময়ের আগে বেলা ২টায় বাসায় ফিরতে শিক্ষার্থীদের বাসে উঠলে কর্মকর্তাদের নামিয়ে দেন তারা। এদিন বাস থেকে নেমে অফিসে ফিরে যান তারা। পুরো সময় অফিস করে ৪টায় বাসায় যান। বুধবার কর্মকর্তারা ২টায় বাসায় ফেরার জন্য বাসে ওঠেন। শিক্ষার্থীরা তাদের নেমে যেতে বলেন। এসময় কয়েকজন কর্মকর্তা নেমে শিক্ষকদের বাসে উঠে চলে যান। অন্যরা বাসেই বসেছিলেন। এছাড়া বাসের পাশে কয়েকজন কর্মকর্তা দাঁড়িয়েছিলেন।
এসময় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের শাখা কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন এসে ধমকের সঙ্গে কর্মকর্তাদের ৪টা পর্যন্ত অফিস করতে বলেন। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন নেই, তেমন কাজও নেই। এ জন্য দ্রুত বাসায় যাওয়া যায়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন চড়, থাপ্পড় এবং লাথি মারেন সাখাওয়াত হোসেনকে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
অভিযুক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের শাখা কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন, তাদেরকে শিক্ষার্থীরা বলার পরেও শুনছিলেন না। তখন আমি তাদেরকে দুইটার বাসে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের বাসে ঠেলাঠেলি করে যাবে কেন জিজ্ঞেস করছিলাম। তাদেরকে নেমে চারটার বাসে যেতে বলি। এটা সে মাইন্ড করেছে। তখন সাখাওয়াত আামকে বলে আপনি কথা বলছেন কেন? কথাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়।
ভুক্তভোগী রেজিস্ট্রার অফিসের শাখা কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বাসায় যাচ্ছি এজন্য আমাদের বকাবকি করেতেছিল। এ সময় আমি বলেছি বিশ্ববিদ্যালয় উাপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ প্রশাসন নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজও নেই তেমন। প্রশাসন আসলে আমরা ৪ টা পর্যন্ত অফিসে থাকি। এক পর্যায়ে আমাকে মেরেছে। এরকম করবে আমি কল্পনাও করতে পারিনি। বিল্লাল হোসেন তো সবচেয়ে বেশি অফিস ফাঁকি দেয়।
কর্মকর্তারা বলেন, এক কর্মকর্তা আরেক কর্মকর্তার গায়ে হাত তোলা কখনোই উচিত নয়। সে অধিকারও তার নেই। কারণ সে বিশ্ববিদ্যালয়ের অথোরিটির কেউ নন। এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা চাই এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হোক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ বলেন, শিক্ষার্থীরা কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেছে পুরো সময় অফিস করার জন্য। তবে এটা নিয়ে তারা মারামারি করবে এটা কোনোভাবেই উচিত নয়। কারণ সে বিশ্ববিদ্যালয়ের অথোরিটির কেউ নন। তবে আমরা চাই দুপুরে কর্মকর্তাদের বাস শিডিউলে না রাখা তাহলে এই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষকদেরকে বলব আপনারা আপনাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবেন। অফিস সময়টা নিজেদের ডেস্কেই থাকবেন। যে কেউ বিশৃঙ্খলা করলে তাকে ছাত্র সমাজ প্রতিহত করবে। সকলে মিলে একসঙ্গে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করলে এ বিশ্ববিদ্যালয় অনন্য উচ্চতায় পৌছাবে।
প্রসঙ্গত, আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অফিসের অনেক কর্মকর্তা ক্যাম্পাসে আসেন নি। অফিস সময়ের আগেই তারা অধিকাংশ কর্মকর্তারা বাসায় ফিরে যান।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ