ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

খোঁজ মিলছে না সেই লেডি বাইকারের!
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
লেডি বাইকার রিয়া। সংগৃহীত ছবি

সিলেটের রিয়া রায়। স্মার্ট, সুদর্শন তরুণী। নেট দুনিয়ায় লেডি বাইকার নামে পরিচিত। ফেসবুকে ভিডিও দিয়ে তরুণীদের মোটরসাইকেল চালাতে উদ্বুদ্ধ করতেন তিনি। নিজে টিকটক ভিডিও তৈরি করে, ছড়িয়ে দিতেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ছিলেন উশৃঙ্খল জীবনযাপনে অভ্যস্ত। কিন্তু লেডি বাইকার রিয়া রায়ের অন্ধরমহলের খবর সবারই ছিল অজানা। সম্প্রতি পুলিশের অভিযানে রিয়া রায়ের বিলাসী জীবনযাপনের অন্ধরমহলের খবর প্রকাশ পায়।

স্মার্ট ও সুদর্শন তরুণী হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাসহ অনেকেই রিয়া রায়কে সবাই ভালো চোখে দেখতেন। কিন্তু এসবের আড়ালে রিয়া রায়ের মূল উদ্দেশ্যে ছিল সিলেটে মাদকের নেটওয়ার্ক। সিলেটের রাস্তায় নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থায় চালাতেন মোটরসাইকেল। এ ছাড়া বিমানবন্দর সড়কে দিন-রাত যেকোনো সময় যাতায়াত ছিল তার। যার কারণে উঠতি বয়সী তরুণ ছাড়াও অনেকের নজর কাড়েন রিয়া। সেই রিয়া এখন পলাতক। তার কাঁধে মাদকের মামলা। এক সপ্তাহ ধরে পুলিশ তাকে হন্যে হয়ে খুঁজলেও পাচ্ছে না। তবে রিয়ার বয়ফ্রেন্ড সামি মাদকের মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারান্তরীণ রয়েছেন। রিয়ার মাদক জগতের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর তার কর্মকাণ্ড নিয়ে তোলপাড় চলছে। তাকে নিয়ে নানা জল্পনা হচ্ছে নগরীর কুমারপাড়া ঝরনারপাড় এলাকায়ও।

পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে ও এজাহার অনুযায়ী, পুলিশের ধাওয়ায় বয়ফ্রেন্ড সামির সহযোগিতায় পালিয়ে যান লেডি বাইকার রিয়া। তার বয়ফ্রেন্ড কারান্তরীণ সামি নগরীর মিরাপাড়ার ১৪৯/বি নং বাসার শামসুল ইসলামের ছেলে আর রিয়া রায় নগরীর কুমারপাড়ার মন্দিরগলির ঝরনারপাড় ৬২/এ-এর বাসিন্দা রামু রায়ের মেয়ে। তার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের ষোলঘর এলাকায়।

জানা যায়, গত ৭ নভেম্বর রাতে বয়ফ্রেন্ড আরমান সামিকে নিয়ে সিলেটের এয়ারপোর্ট-সংলগ্ন এলাকায় যান রিয়া। নীল রঙের একটি গাড়ি (ঢাকা মেট্রো খ ১৪-০৫১২) নিয়ে এদিক-সেদিক ঘুরছিলেন তারা। টহল পুলিশের সন্দেহ হলে গাড়িটি থামানোর সংকেত দেওয়া হয়। একটু দূরে গিয়ে থামে গাড়িটি। তখন গাড়ি থেকে এক তরুণী দ্রুত নেমে যান। তাৎক্ষণিক গাড়িটি চালানো অবস্থায় থাকায় আরমান সামিকে ধরতে সক্ষম হয় পুলিশ। এরপর আরমান সামিই জানায়, পালিয়ে যাওয়া তরুণী তার গার্লফ্রেন্ড রিয়া রায়। তখন পুলিশ গাড়ি তল্লাশি করে মাম পানির বোতলে রাখা বিশেষ মদ ৫০০ মিলিগ্রাম, ইয়াবা ট্যাবলেট ১০ পিস ও দুই পুড়িয়া গাজা উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ৮ নভেম্বর এয়ারপোর্ট থানার এসআই গৌতম চন্দ্র দাশ বাদী হয়ে রিয়া ও আরমান সামিকে আসামি করে মাদক মামলা করেন।

মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুল জাকির বলেন, ‌‘পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখছে। রিয়া রায়ের সহযোগী সামি কারাগারে থাকলেও তিনি পলাতক রয়েছেন। ইতোমধ্যে সম্ভাব্য কয়েকটি স্থানে রিয়াকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। তাকে গ্রেফতারের জন্য আমরা সব পন্থা অবলম্বন করছি। আমরা আশাবাদী যেকোনো সময় তিনি পুলিশের খাঁচায় বন্দী হবে। এজন্য পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।’

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

 



এই পাতার আরো খবর