ঢাকা, রবিবার, ২১ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

জালালাবাদ সমিতিকে অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান শফি আহমেদ চৌধুরীর
অনলাইন ডেস্ক
শফি আহমেদ চৌধুরী। ফাইল ছবি

জালালাবাদ সমিতি একটি ঐতিহ্যবাহী সামাজিক সংগঠন। বর্তমানে জালালাবাদ সমিতি আছে কিন্তু তাদের সেই কর্মের প্রাণশক্তি খুব একটা দেখা বা শোনা যায় না। শুধু সমিতির নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ছবিসহ রং বেরংয়ের কার্ড সদস্যদের ডাকযোগে পাঠানো হয় ভোটটি তাদের পক্ষে দেবার জন্য। অথচ সিলেটবাসীর ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। তাই জালালাবাদ সমিতির নির্বাচনকে সামনে রেখে সুপরিকল্পিত টেকসই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়নে সংগঠনকে দৃঢ় ও মজবুত করতে সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফি আহমেদ চৌধুরী।

এক বিৃতিতে তিনি বলেন, ‌‘জালালাবাদ সমিতি একটি ঐতিহ্যবাহী সামাজিক সংগঠন। সুদীর্ঘ প্রায় শতবর্ষের সংগঠনটির নামের সঙ্গে সিলেটের অনেক জ্ঞানী-গুণী বিজ্ঞ সদস্যের দীর্ঘদিনের শ্রম, পরিশ্রম, সঠিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন জড়িয়ে রয়েছে। তাদের সুপরিকল্পিত টেকসই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন এ সংগঠনকে দৃঢ় ও মজবুত করেছে। বর্তমানে জালালাবাদ ভবন একটি মজবুত বুনিয়াদের ওপর দাঁড়িয়ে আছে।

এ প্রসঙ্গে যাদের স্বনামধন্য নাম জড়িত আছে তাদের মধ্যে তৎকালীন সিলেটের অত্যন্ত গর্বিত সন্তান ও বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তাদের মধ্যে শিক্ষাবিদ, অধ্যাপক, ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মহাপরিদর্শক, সমাজসেবক, শিল্পী-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, উকিল, সরকারি উচ্চপদের কর্মকর্তা, নারীসমাজের অনেক নিবেদিত সমাজকর্মী মা-বোন সবাই একটি লক্ষ্য সামনে রেখে এগিয়ে এসেছিলেন শুধু নিজেদের জন্মস্থান হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর পুণ্যভূমি সিলেটের উন্নয়নের মায়ার টানে। কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ সেখানে স্থান পায়নি। সবাই নিজ নিজ দক্ষতার মিলন ঘটিয়েছিলেন জালালাবাদ সমিতিকে কেন্দ্র করে।

আজ এ প্রসঙ্গে যাদের নাম প্রথমেই মনে পড়ে তাদের মধ্যে এস-ডি-চৌধুরী, ই-এ-চৌধুরী, হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী, সাইফুর রহমান, ফারুক রশীদ চৌধুরী, আহবাব চৌধুরী, বেগম শাহানা কবীর এবং আরও অনেকে।

তাদের মিলিত স্বপ্ন ও পরিশ্রমের ফলে গড়ে উঠেছে রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে জালালাবাদ সমিতির সুরম্য অট্টালিকা ‘জালালাবাদ ভবন’। এ বিশাল কাঠামো নির্মাণের ফলে সমিতির আর্থিক অবস্থার প্রভূত উন্নতি হয়েছে। আজ শুধু সমিতির সদস্যদের বার্ষিক চাঁদার টাকার ওপর নির্ভরশীল নয় জালালাবাদ সমিতি। আমি সবার বিদেহী আত্মার শান্তির জন্য আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করার প্রস্তাব করছি।

তিনি বলেন, বর্তমানে জালালাবাদ সমিতি আছে কিন্তু তাদের সেই কর্মের প্রাণশক্তি খুব একটা দেখা বা শোনা যায় না। শুধু সমিতির নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ছবিসহ রং বেরংয়ের কার্ড সদস্যদের ডাকযোগে পাঠানো হয়েছে ভোটটি তাদের পক্ষে দেবার জন্য। আমরা জানি না, তারা জালালাবাদের জন্য কী কাজ করবেন, কী উদ্দেশ্যে নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। জালালাবাদ সমিতির মতো একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিজেদের জড়িত রাখতে পারলে সেটাকে ভবিষ্যতে ব্যক্তিগত পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করে অনেকেই নামিদামি ব্যক্তিত্ব বলে পরিচিতি পেতে পারেন।

প্রসঙ্গত, বর্তমান নির্বাচন ঘিরে প্রার্থীদের আবেদন-নিবেদন তুঙ্গে। তাদের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবীদও আছেন। এমনটা সেকালেও ছিল, কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য ছিল মহৎ সমাজসেবা। নিজ এলাকার সহায়সম্বলহীন বেকার যুবকদের পাশে দাঁড়ানো। নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে যথাযথ কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে সব অন্যায় দুর্নীতির প্রতিবাদ করা। আজ সমাজের সর্বত্র অন্যায়, দুর্নীতি প্রতারণার মহোৎসব চলছে। এখন সিলেটবাসী প্রতিকারের আশায় কোথায় যাবে। আমার বিনীত নিবেদন, জালালাবাদ সমিতির পক্ষ থেকে যে যেখানে আছেন, এ ধরনের অন্যায়ের প্রতিবাদ করুন, অসহায়ের পাশে দাঁড়ান। তাহলেই সমাজসেবার সুস্পষ্ট নিদর্শন রয়ে যাবে।

শফি আহমেদ চৌধুরী আরও বলেন, সমগ্র বাংলাদেশে জালালাবাদ ভবনের মতো আর কোনো ঐতিহ্যবাহী গুণীজনের সমাবেশ কার্যকর আছে বলে আমার জানা নেই। আমি মনে করি, আপনারাও পূর্বসূরিদের মতো ভালো কাজ করে আরও নাম করুন। তবে আর কিছু না হোক অন্তত একটি মিলিত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মৃত্যুবার্ষিকীতে তাদের স্মরণ করবেন; তাহলেই তাদের আত্মা শান্তি পাবে। জালালাবাদ সমিতি দীর্ঘজীবী হোক, সেই কামনা করি।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ 



এই পাতার আরো খবর