ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

মা ও ছেলেকে হত্যার দায়ে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট:

সিলেট নগরীর মিরাবাজারে মা ও ছেলেকে খুনের মামলায় স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক নুরে আলম ভূইয়া এ রায় ঘোষণা করেন। 

মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামীরা হলেন- কুমিল্লার তিতাস এলাকার বাসিন্দা ইউসুফ খান ও তাঁর কথিত স্ত্রী তানিয়া বেগম। আদালতের বিচারক রায় ঘোষণার সময় আদালতে দুই অভিযুক্ত আসামি উপস্থিত ছিলেন। তানিয়া নিহত গৃহকর্ত্রী রোকেয়া বেগমের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতো। 

আদালতের রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) মো. জোবায়ের বখ্ত। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল সিলেট নগরীর মিরাবাজার খারপাড়া এলাকায় একটি বাসা থেকে রোকেয়া বেগম (৪০) ও তার ছেলে রবিউল ইসলামের (১৬) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় রোকেয়া বেগমের পাঁচ বছর বয়সী শিশুকন্যা রাইসা ইসলাম। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. জাকির হোসেন ওই দিন সিলেট কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অভিযান চালিয়ে তানিয়া ও ইউসুফ খানকে গ্রেপ্তার করে। রোকেয়ার বাসায় গৃহকর্মী ছিলেন তানিয়া। একপর্যায়ে রোকেয়ার সাথে মনোমালিন্যের জের ধরে কাজ ছেড়ে চলে যান তানিয়া। তিনি তার কথিত স্বামী ইউসুফ খানের সঙ্গে নগরের একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন।  সূত্র জানায়, পূর্ববিরোধের জেরেই ইউসুফ ও তানিয়া মিলে চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে মা-ছেলেকে খাইয়ে কুপিয়ে খুন করে বিছানায় ফেলে যান। এ সময় রোকেয়ার পাঁচ বছর বয়সী শিশু রাইসা ইসলামকেও শ্বাস রোধ করে খুন করার চেষ্টা করে তারা। একপর্যায়ে ওই শিশু অচেতন হয়ে পড়লে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যান তারা। এরপর পুলিশ ওই বাসা থেকে মা-ছেলের লাশ উদ্ধার ও ওই শিশু রাইসাকে জীবিত উদ্ধার করে।

পিবিআই সিলেটের পরিদর্শক দেওয়ান আবুল হোসেন ২০১৯ সালের ১৯ মে ইউসুফ ও তানিয়াকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে আদালতের বিচারক ২০২০ সালে ৯ জানুয়ারি চার্জ গঠন করে বিচারকাজ শুরু হয়। দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষে অবশেষে বৃহস্পতিবার আদালত এ রায় দেন। সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি মো. জোবায়ের বখ্ত বলেন, মা-ছেলেকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রত্যক্ষ সাক্ষী হিসেবে রাইসা ইসলাম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিমূলক সাক্ষ্য দিয়েছে। এর আগে গ্রেপ্তার দুজনই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলায় ২৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আদালতে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি সন্দেহাতিতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দুই আসামীকেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। 

বিডি প্রতিদিন/এএম



এই পাতার আরো খবর