ঢাকা, রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

জাল বুনে জীবিকা
বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি
‘ঝাঁকি জাল’ বাড়তি টাকা আয় করেন গৃহিনী শেফালি রাণী।

গ্রামীণ জীবনে মাছ ধরার পছন্দের উপকরণ ‘ঝাঁকি জাল’। এটি একটি নিপুণ কারুকাজ। সাধারণত বুনতে হয় হাতেই। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ঝাঁকি জাল বুনে জীবিকা নির্বাহ করছেন গৃহিনী শেফালি রাণী (৪০)। 

একাজের দক্ষ কারিগর তিনি। তার হাতের মহিমায় তৈরি হয় নিঁখুত-টেকসই ঝাঁকি জাল। তার বুনা জালের জুড়ি মেলা ভার। ঘর-গৃস্থালির কাজের ফাঁকে একটু একটু করে বুনেন জাল। এতে সংসারে যোগ হয় বাড়তি আয়।

সরেজমিন শেফালি রাণীর গ্রাম, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের চকরিয়া গ্রামে যাওয়া হয়। গিয়ে দেখা যায়, ঘরের বারান্দায় বসে আপন মনে ঝাঁকি জাল (স্থানীয় নাম উড়াল জাল) বুনছেন তিনি। বারান্দার খুঁটিতে আটকানো জালের উপরের অংশ। বিশেষ কায়দায় তৈরি বাঁশের সূঁইতে সুতো পেঁচিয়ে, আরেক টুকরো বাঁশ কাঠির সাহায্যে এগিয়ে চলছে জাল বুনার কাজ।

তার সাথে কথা হলে তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, প্রায় ২০ বছর পূর্বে প্রতিবেশীর কাছ থেকে ঝাঁকি জাল তৈরী আয়ত্ব করেন তিনি। দিনমজুর স্বামীর সংসারে বাড়তি আয় যোগাতে, সেই থেকেই ঘর-গৃস্থালির অবসর সময়টুকু তিনি জাল বুনেন। মাস-পনের দিনে বুনেন একেকটি জাল। জাল বুনতে এক থেকে আধা কেজি সুতো আর লোহার কাঠি প্রয়োজন হয় চার থেকে তিন কেজি। বুনা শেষ হলে ক্রেতার চাহিদা মতো উপরে রশি ও নীচে বসাতে হয় সারি সারি লোহার কাঠি। 

তিনি আরও জানান, বর্তমানে মেশিনের সাহায্যেও জাল বুনা হয়। তবে হাতে বুনা জাল নিঁখুত-টেকসই হওয়ায় এর চাহিদাও বেশি। টেকেও অনেকদিন। একটি জাল বুনতে সাধারণত খরচ হয় ৬-৭ হাজার টাকা। ধরন অনুযায়ী বিক্রি হয় ১০-১২ হাজার টাকায়। এ থেকে মেয়ে-ছেলের পড়ালেখার খরচসহ অন্যান্য ব্যয় সংকুলান হয়। বর্তমানে এ কাজের কারিগরের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ



এই পাতার আরো খবর