ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

বন্যার কোথাও উন্নতি, কোথাও অবনতি
সিলেটে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা বেড়েছে আরও এক লাখ
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির কোথাও উন্নতি ও কোথাও অবনতি হয়েছে। গেল দুদিন ধরে বৃষ্টিপাত কমায়, কমছে নদীর পানিও। ফলে উজান এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আর ভাটি অঞ্চল দিয়ে পানি নামতে থাকায় নিম্নাঞ্চলে কিছুটা অবনতি হয়েছে। 

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, গেল ২৪ ঘণ্টায় সিলেট জেলায় নতুন করে আরও প্রায় এক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। সব মিলিয়ে বন্যা আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়েছে। সুরমা ও কুশিয়ারার পানি সবকটি পয়েন্টে এখনো বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সূত্র জানায়, সিলেটে দুদিন ধরে কমেছে বৃষ্টিপাত। উজান থেকে ঢল নামাও থেমেছে। ফলে কমতে শুরু করেছে নদ নদীর পানি। জেলার প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারাসহ সবকটি নদীর পানি কমা অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবারের চেয়ে গতকাল শুক্রবার নদীর পানি কমার গতি আরও বেড়েছে। পাঁচ দিনের পর গতকাল শুক্রবার সকালে সিলেটের আকাশে সূর্যের দেখা মিলেছে। এতে জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ‘আজ বৃষ্টি না হওয়ায় পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢল না হলে পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে।’

পাউবো সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার ও সিলেট পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার কমেছে। কুশিয়ারা নদীর পানি আমলসীদ পয়েন্টে ৪৫ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টে ৩৬ মিটার ও শেরপুর পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার কমেছে। তবে এখনো নদী দুটির পানি সবকটি পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া লোভা, সারি, ডাউকি, সারিগোয়াইন ও ধলাই নদীর পানি গেল ২৪ ঘণ্টায় হ্রাস পেয়েছে। 

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গতকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সিলেট মহানগর ও জেলার ১৩টি উপজেলায় ১০ লাখ ৪৩ হাজার ১৬১ জন মানুষ পানিবন্দি ছিলেন। এর আগের দিন একই সময়ে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা ছিল ৯ লাখ ৫৭ হাজার ৪৪৮ জন। অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ৮৫ হাজার ৭১৩ জন। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২৯টি ওয়ার্ডসহ জেলার ১৩টি উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে ৭১৩টি। এর মধ্যে ৩৮৭টিতে এখনো ২৮ হাজার ৯২৫ জন অবস্থান করছেন। 

জানা গেছে, প্রথম দফায় জেলার গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জের মানুষ বেশি আক্রান্ত হলেও দ্বিতীয় দফায় সিলেটের সব উপজেলার মানুষ বন্যা আক্রান্ত হয়েছেন। নদ-নদীর পানি কমলেও এসব উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও প্লাবিত রয়েছে। এতে পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ কমছেই না। ভাটির দিকে পানি নামতে থাকায় নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। 

এদিকে, সুরমা নদীর পানি কমায় সিলেট নগরের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বন্যা আক্রান্ত এলাকায় পানি কমতে শুরু করেছে। কিছু কিছু এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে। 

সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান জানান, প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে সিলেটের বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও বন্যা আক্রান্তদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসন রান্না করা খাবার, শুকনো খাবার, শিশু ও গোখাদ্যসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণ সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে। 

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত



এই পাতার আরো খবর