ঢাকা, সোমবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

সাংবাদিক ও শাবিছাত্র হত্যা: সিলেটে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আসামি শতাধিক
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
সাংবাদিক এটিএম তুরাব ও শাবি ছাত্র রুদ্র সেন।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সিলেটে সাংবাদিক এটিএম তুরাব ও শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) ছাত্র রুদ্র সেন হত্যাকাণ্ডে দুইটি মামলা হয়েছে। সোমবার (১৯ আগস্ট) অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দুইটি দায়ের করা হয়। তুরাব হত্যার ঘটনায় তার বড় ভাই আবুল আহসান মো. আযরফ (জাবুর) ও রুদ্র সেন হত্যার ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাফিজুল ইসলাম বাদী হয়েছেন। 

মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাবেক তিন সংসদ সদস্য, শাবির সাবেক ভিসি, এসএমপির ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাসহ শতাধিক ব্যক্তির নাম আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত হিসেবে দুই মামলায় আরও অন্তত ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। শুনানি শেষে মামলা দুটি এফআইআর হিসেবে রেকর্ড করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। 

সাংবাদিক তুরাব হত্যা মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ১৯ জুলাই বেলা ২টার দিকে সিলেট নগরের বন্দরবাজারস্থ মধুবন সুপার মার্কেটের সামনে ছাত্রজনতার ডাকে আন্দোলন কর্মসূচি চলাকালে দৈনিক জালালাবাদ ও দৈনিক নয়াদিগন্তের প্রতিনিধি এটিএম তুরাব পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন। এসময় সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) উপ-কমিশনার (উত্তর

তুরাব হত্যা মামলায় ১৮ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০০-২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ওই মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হচ্ছেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, এসএমপি’র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. সাদেক দস্তগীর কাউসার, উপ-কমিশনার আজবাহার আলী শেখ, সহকারী কমিশনার মিজানুর রহমান, কোতোয়ালী থানার তৎকালীন ওসি, পরিদর্শক (তদন্ত), বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি পীযুষ কান্তি দে, সিটি কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খান, রুহেল আহমদ ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সজল দাস অনিক। 

এদিকে, শাবিছাত্র রুদ্র সেন হত্যা মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে উপ-কমিশনার আজবাহার আলী শেখ এবং আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ক্যাডাররা ছাত্রদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। একপর্যায়ে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান কাটা রাইফেল ও সাধারণ সম্পাদক সজিবুর রহমান বন্দুক দিয়ে ছাত্রজনতাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে এগুতে থাকে। এসময় আখালিয়া নেহারিপাড়ার দুই নারী ও এক পুরুষ গুলিবিদ্ধ হন। মামলায় উল্লেখিত আসামীরা সুরমা আবাসিক এলাকার ভেতরে গিয়ে ছাত্র-জনতাকে খুঁজতে থাকে এবং নির্বিচারে গুলি করতে থাকে। তারা ধাওয়া দিয়ে ছাত্রজনতাকে সুরমা আবাসিক এলাকার ভেতর দিয়ে এতিম স্কুলের রাস্তার দিকে নিয়ে যায়। এসময় স্রোতে প্রবাহমান একটি খাল পাড়ি দেওয়ার সময় পানিতে পড়ে যায় রুদ্র সেন। আসামিরা জানতো রুদ্র সাঁতার জানতো না। তাই তারা পানিতে ডুবিয়ে রুদ্রের মৃত্যু নিশ্চিত করে। 

রুদ্রসেন হত্যা মামলায় ৭৬ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২০০-৩০০ জনকে আসামী করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য আসামিরা হচ্ছেন- এসএমপির উপ-কমিশনার আজবাহার আলী শেখ, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. সাদেক দস্তগীর কাউছার, জালালাবাদ থানার ওসি, পরিদর্শক (তদন্ত), সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সাবেক  সাবেক এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব, শাবির সাবেক ভিসি ফরিদ উদ্দিন, সাবেক প্রোভিসি কবীর হোসেন, সাবেক প্রক্টর মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী, কলেজ ইন্সপেক্টর তাজিম উদ্দিন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি শফিউল আলম নাদেল, সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রণজিত সরকার, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ, সহসভাপতি জগদীশ চন্দ্র দাস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিধান কুমার সাহা, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন খান, মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ, মহানগরের সভাপতি কিশোয়ার জাহান সৌরভ, সাধারণ সম্পাদক নাইম আহমদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সজল দাস অনিক, সিটি কাউন্সিলর রুহেল আহমদ, তারেক উদ্দিন তাজ ও হেলাল উদ্দিন, শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সজিবুর রহমান।

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ



এই পাতার আরো খবর