ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

ভোগান্তি-বিশৃঙ্খলা
চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে টানা ৪ দিনের যাত্রীদের ঢল
সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন

ট্রেন যাত্রীদের ভোগান্তি-বিশৃঙ্খলা এবং দীর্ঘ লাইনের মধ্যদিয়েই শুরু হয়েছে রেলওয়ের টিকেটিং ব্যবস্থার নতুন অ্যাপসের যাত্রা। নতুন এই অ্যাপসের (সহজ) মাধ্যমে করতে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হওয়া টিকেট সংগ্রহ করতে সূর্বণা, গোধুলী, সোনার বাংলা, তূর্ণানিশিতাসহ বিভিন্ন ট্রেনের যাত্রীরা দীর্ঘ লাইনে ছিলেন দুপুর থেকেই। এরই মধ্যে অনেকেই লাইন ভেঙ্গে যাওয়ার ভয়ে সময়মতো দুপুরের ভাত-নাস্তাও করতে পারেননি যাত্রীরা।

তবে টিকেটিং অ্যাপস ‘সহজ’র এই নতুন সিস্টেমের কাছে এখনও অসহায় রেল প্রশাসন। চট্টগ্রামের টিকেটের তদারকির দায়িত্বে থাকা নতুন ডিসিও (ইতি ধর) বুঝে উঠতে কষ্ট হচ্ছে বলেও জানান রেলের স্টাফরা। এসব দেখে রমজানের টিকেটের কি অবস্থা হবে, আদৌ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা হবে কিনা সেই প্রশ্ন রেল সংশ্লিষ্টদের। তবে সবমিলে বিশৃঙ্খলা ও ভোগান্তির মধ্যেই টিকেট বিক্রয় হচ্ছে বলে ট্রেনের সাধারণ যাত্রীরা।

বাসু নামের একজন যাত্রী বলেন, দুপুর থেকে দীর্ঘ লাইন ধরে থাকার পরও টিকেট না নিয়ে ফেরত এসেছি। অনলাইনেও টিকেট নিতে অনেক কষ্ট। নতুন সিস্টেমে কাজ হচ্ছে শুনলাম। তারপরও অনেক বিশৃঙ্খলা দেখেছি। এমন করে টিকেট বিক্রয় করলে যাত্রীরা আরও অনেক কষ্ট পাবেন বলে জানান তিনি।

পূর্বাঞ্চলের এডিশনাল চীফ ইঞ্জিনিয়ার (ট্র্যাক) মো. আরমান হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নতুন অ্যপসের মাধ্যমে শুক্রবার থেকে টিকেট বিক্রয় শুরু হয়েছে। এই ‘সহজ’ অ্যাপসে অনলাইনের আজ বৃহস্পতিবার থেকে ২৬-২৯ মার্চের টিকেট বিক্রয় শুরু হলো। তবে শুরুর দিকে কিছুটা তো সমস্যা হবেই। সহসাই সমাধান হবে বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা বলছেন, সিএনএসের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অনলাইনে ট্রেনের টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অভিযোগ পেয়েছি। সেই সিএনএসের কিছু স্টাফ কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত ছিলো। সেই অভিযোগযুক্তদেরও সহজ যুক্ত করেছে। তবে অনেক আইনি জটিলতা পেরিয়ে নতুনভাবে টিকেটিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আশা করি এখন থেকে আর অনলাইন টিকিটিংয়ে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানান শীর্ষ কর্মকর্তারা।

রেলওয়ে জানা গেছে, টানা দীর্ঘ দেড় যুগ পরেই প্রতি টিকেটের দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণে ট্রেনের টিকেটিং সিস্টেম প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম (সিএনএস) লিমিটেড থেকে সহজের মধ্যে হাত বদল হয়েছে। এই হাত বদলের কারণে আগামী ২৬ মার্চ থেকে সহজের মাধ্যমেই দেশের সকল যাত্রীরা অনলাইনসহ নানাভাবে ট্রেনের টিকেট ক্রয় করবেন। আগামী পাঁচ বছরের জন্য টিকেটের ‘সহজ’ লিমিটেডের জয়েন্ট ভেঞ্চাররে সঙ্গে সম্প্রতি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ২১ দিনের মধ্যে মোবাইল ও ইন্টারনেট টিকিটসহ বাংলাদেশ রেলওয়ে ইন্টিগ্রেটেড টিকিটিং সিস্টেমের (বিআরআইটিএস) ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট, সাপ্লাই, ইনস্টল, কমিশন, অপারেট ও মেইনটেন্যান্স কাজ শুরু করবে সহজ (জেভি)। 

চুক্তিতে প্রতিটি টিকিট ইস্যুর জন্য সহজ (জেভি) কমিশন নেবে ২৫ পয়সা। একই কাজের জন্য ২ টাকা ৯৯ পয়সায় চুক্তি ছিল সিএনএস’র সঙ্গে। এখন থেকে টিকিটপ্রতি ২৫ পয়সা কমিশনে সহজের সঙ্গে চুক্তি করায় টিকিট ব্যবস্থাপনা বাবদ রেলওয়ের বছরে সাশ্রয় হবে প্রায় ৮৩ কোটি টাকা। এটি রেলভবনে বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার শাহাদাত আলী ও সহজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মালিহা কাদির নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি চুক্তিপত্রে সই করেন।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর



এই পাতার আরো খবর