ঢাকা, বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামে টেরিবাজার এখন জনসমুদ্র, হাজার কোটি টাকা বিক্রির প্রত্যাশা
আজহার মাহমুদ, চট্টগ্রাম

ঈদকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের কাপড়ের বৃহৎ পাইকারি বাজার টেরিবাজার এখন এখন জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ভোররাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। বছর পাঁচেক আগেও এই বাজারে মূলত থান কাপড় বিক্রি হলেও গত কয়েক বছর ধরে তৈরি পোশাকও বিক্রি হচ্ছে। রোজার শুরুতে থান কাপড়ের বিক্রি বেশি হলেও এই মূহুর্তে বিপুল পরিমাণ তৈরি পোশাক বিক্রি হচ্ছে। এবারের ঈদ মৌসুমে এই বাজারে বিক্রির পরিমাণ ১ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

মঙ্গলবার দুপুরে টেরিবাজারের বেশকিছু শপিং মল, দোকান ঘুরে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভীড় দেখা গেছে। শিশু ও তরুণীদের অনেকে থ্রিপিচ, গাউনসহ বিভিন্ন তৈরি পোশাক কিনছেন। পুরুষ ও নারীরা পরিবারের সদ্যদের জন্য পাঞ্জাবী, শাড়ি, কসমেটিক্সসহ বিভিন্ন পণ্য কিনছেন। বাজারের টেইলার্সের দোকানগুলোতেও চলছে শেষ মূহুর্তের ব্যস্ততা।

নগরীর পাহাড়তলী এলাকার গৃহবধূ নাজনীন মুন্নি জানান, পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় থান কাপড় কিনতে তিনি বাজারে এসেছেন। পছন্দসই একটি শাড়ি পেয়ে নিজের জন্য সেটিও কিনে নিয়েছেন। রোজার শুরুতে তিনি কিছু কেনাকাটা করেছেন। এখন বাকিটুকু করছেন।।

হালিশহর এলাকার বাসিন্দা পারভেজ হাসান জানান, তিনি নিজের ও বাবার জন্য পাঞ্জাবী, স্ত্রীর জন্য শাড়ি কিনেছেন। এখানে প্রচন্ড ভীড় থাকলেও বৈচিত্র্য থাকায় তিনি এখানে কেনাকাটা করতে আসেন।

টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমিনুল হক জানান, ঐতিহ্যবাহী এই বাজারে ১২০টির মতো ছোট বড় মার্কেটে ৩ হাজারের মতো দোকান আছে। এরমধ্যে অনেকগুলো ওয়ান স্টপ শোরুম আছে। যেগুলোতে জামা জুতো থেকে শুরু করে ঈদের সকল সামগ্রী একসাথে পাওয়া যায়। গত কয়েক বছরের হিসেবে, এবারের ঈদে পাইকারি ও খুচরা মিলিয়ে টেরিবাজারে ১ হাজার কোটি টাকার বেশি পণ্য বিক্রি হবে বলে প্রত্যাশা তার। নগরীর অন্য মার্কেটগুলোর তুলনায় এখানে দামও তুলনামূলক কম বলে দাবি আমিনুলের।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এই বাজারের বেশিরভাগ পণ্যই আমদানি করা। ভারত ও পাকিস্তানী শাড়ি, থ্রিপিচ, লেহেঙ্গা, গাউনসহ নানা গার্মেন্ট সামগ্রী আমদানি করেছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, দুবাই, চীন, ভিয়েতনাম থেকে কসমেটিক, জুয়েলারি, জুতাসহ আনুসঙ্গিক পণ্য আমদানি করেছেন ব্যবসায়ীরা। মনে রেখো, মেগামার্ট, রাজস্থান, বৈঠকবাজার, পরশমনিসহ বেশ কয়েকটি ওয়ান স্টপ শপে একই ছাদের নিচে অথবা একই ভবনের কয়েকটি ফ্লোরে মিলছে শাড়ি, থ্রিপিচ, পাঞ্জাবিসহ সব ধরনের পোশাক, অলংকার, প্রসাধনী, জুতাসহ অন্যান্য পণ্য।

এ বাজারের আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, কিশোরী ও তরুণীদের পোশাকের ক্ষেত্রে প্রতি বছর কোনো না কোনো পোশাক ট্রেন্ডিং পণ্য হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠে বাজারে। ওই পণ্যটি বিক্রির শীর্ষে থাকে। এবারো গুল আহমেদ, সাদা বাহার, বিন সাইদসহ বেশকিছু নামের পোশাক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বলে জানান বিক্রয়কর্মীরা।

বেচাকেনার পরিমান সন্তোষজনক উল্লেখ করে একটি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার রহিম উদ্দিন বলেন, বিক্রি ভালো। তবে ক্রেতারা দাম নিয়ে বেশি দর কষাকষি করেন। তবে আমরা চাই পণ্যটি বিক্রি হয়ে যাক। কারণ, এখন বিক্রি করতে না পারলে অবিক্রিত থেকে যাবে। তাতে আমাদের বিনিয়োগ উঠে আসবে না।

এদিকে ঈদকে ঘিরে এই বাজারের ৫ শতাধিক দর্জির দোকানের কর্মীরা দিনরাত কাজ করছেন। আলপনা টেইলার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সত্বাধিকারী শাহেদ বিন নেওয়াজ জানান, তারা এখন কোনো অর্ডার নিচ্ছেন না। গ্রাহকদের কাছ থেকে আগে যেসব অর্ডার নিয়েছেন সেগুলো কাজ শেষে বুঝিয়ে দিচ্ছেন।

বিডি প্রতিদিন/এএ



এই পাতার আরো খবর