ঢাকা, বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

হালদায় ফের নমুনা ডিম দিল মা মাছ
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

উপমহাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র এবং বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীতে দ্বিতীয়বারের মত নমুনা ডিম দিল মা মাছ। গত সোমবার বিকাল ও সন্ধ্যায় নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ডিম ছাড়ে মাছগুলো। তবে পরিমাণে তা ছিল অনেক কম। টানা বর্ষণ, ঘূর্ণিঝড়ের জলোচ্ছ্বাস এবং পাহাড়ি ঢল সৃষ্টি হওয়ায় নমুনা ডিম ছাড়ে মা মাছ।

জানা যায়, গত ৭ মে মা মাছ হালদা নদীর রাউজান অংশের মইশকরম এলাকার চইল্যাখালি এলাকায় অল্প পরিমাণে নমুনা ডিম ছাড়ে। গত সোমবার দ্বিতীয়বারের মত নমুনা ডিম ছাড়ে। কিন্তু এরপর বৃহৎ পরিসরে আর মূল ডিম ছাড়েনি। তবে ডিম সংগ্রহকারীরা এখনও মূল ডিম ছাড়ার অপেক্ষায় আছেন। প্রতি বছর এপ্রিল থেকে জুন মাসের জো এর সময় হালদা নদীর কার্প জাতীয় রুই মা মাছ প্রাকৃতিক নিয়মে ডিম ছাড়ে।

স্থানীয় প্রবীণ ডিম সংগ্রহকারী কামাল সওদাগর বলেন, গত সোমবার সন্ধ্যায় মা মাছ নমুনা ডিম ছাড়ে। তবে তা অল্প। আমরা নদীতে অপেক্ষা করছি। পুরোদমে ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা এখনও আছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ও চবি প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, এ মৌসুমে দুইবার নমুনা ডিম ছাড়ে মা মাছ। তবে এখনও মূল ডিম ছাড়েনি। আমরা এখনও মূল ডিম ছাড়ার অপেক্ষায় আছি। তাছাড়া আগামী জুন মাসে আরও দুটি জো আছে। তখন হয়তো মা মাছ ডিম ছাড়বে। আমরা এখনও আশাবাদি। বর্তমানে নদীর পানির পরিবেশ ইতিবাচক।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরি সূত্রে জানা যায়, ল্যাব চলতি মৌসুমে মা মাছ ডিম ছাড়ার ছয়টি জো চিহ্নিত করে। এর মধ্যে প্রথম জো ছিল ৫ থেকে ১১ এপ্রিল, দ্বিতীয় জো ছিল ২০ থেকে ২৬ এপ্রিল, তৃতীয় জো ছিল ৪ থেকে ১০ মে ও চতুর্থ জো ছিল ২০ মে থেকে ২৬ মে। এসব জো শেষ। বাকি আছে ২ জুন থেকে ৮ জুন পঞ্চম এবং ১৯ থেকে ২৫ জুন ষষ্ঠ জো। এখন শেষ দুটি জো এর অপেক্ষায় আছেন ডিম সংগ্রহকারীরা।    

অন্যদিকে, প্রতিবছরই এ নদী থেকে সংগ্রহ করা হয় ডিম। ২০২৩ সালে হালদা নদী থেকে ডিম সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৫ হাজার কেজি। ২০২২ সালে সংগ্রহ করা হয়েছিল প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কেজি, ২০২১ সালে সাড়ে ৮ হাজার কেজি, ২০২০ সালে ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি, ২০১৯ সালে প্রায় সাত হাজার কেজি,

২০১৮ সালে ২২ হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৭ সালে মাত্র ১ হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৬ সালে ৭৩৫ (নমুনা ডিম) কেজি, ২০১৫ সালে ২ হাজার ৮০০ কেজি এবং ২০১৪ সালে ১৬ হাজার ৫০০ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে পানির পরিবেশ ভাল থাকায় এবার আশানুরূপ ডিম সংগ্রহ করা যাবে বলে মনে করছেন সংগ্রহকারীরা। 

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর