ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

লোহাগাড়া ও বাঁশখালী উপজেলায় ভোটগ্রহণ সম্পন্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম:

জাল ভোটের অভিযোগ, বহিরাগতদের ভোটকেন্দ্রে শোডাউন, সড়ক অবরোধসহ নানা অভিযোগের মধ্যেই শেষ হয়েছে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া ও বাঁশখালী উপজেলার নির্বাচন। বুধবার ভোটগ্রহণ চলাকালে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে বাঁশখালীর একটি কেন্দ্রে চারজনকে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া তৃতীয় ধাপে স্থগিত হওয়া পটিয়া উপজেলার একটি কেন্দ্রের পুনরায় ভোটগ্রহণের সময় সড়ক অবরোধের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বুধবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল চারটা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ করা হয়। দুই উপজেলায় মোট ২২ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধীতা করেন। এরমধ্যে বাঁশখালীতে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। এ উপজেলায় মোট ভোটার ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৯০৬ জন, কেন্দ্র ১১৫টি।

লোহাগাড়ায় চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। এ উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ২৬ হাজার ৫৯০ জন, কেন্দ্র ৭১টি।

বাঁশখালীর সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার জানান, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা ছাড়াও বাঁশখালীতে ২২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ৬ প্লাটুন বিজিবি ও র‌্যাবের টহল টিম দায়িত্ব পালন করেছে।

ভোটগ্রহণ চলার সময় সকাল ৯টার দিকে লোহাগাড়ার পদুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে দলবল নিয়ে শোডাউন দেয়ার অভিযোগ উঠেছে পাশ্ববর্তী সাতকানিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সেলিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এরফলে ভোটার ও কেন্দ্রে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেন প্রতিপক্ষরা। তবে বিষয়টি অস্বীকার করে সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘চুনতি আমার এক আত্মীয় অসুস্থ। তাকে দেখতে যেতে লোহাগাড়া গিয়েছিলাম।’

বেলা সাড়ে ১২টা দিকে বাঁশখালী উপজেলার বাহারছড়া কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগে মো. বুলবুল (৪১), মো. রিফাত (৩০), মো. আক্কাস উদ্দিন (২৮) ও মো. মেজবাহ উদ্দিনকে (২৯) ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত চক্রবর্তী। এই উপজেলা ছনুয়া খুদুকখালী নোয়াপাড়া কেন্দ্রে সকাল ১০টার দিকে আহমদ উল্ল্যাহ (৫০) নামের এক ব্যাক্তির উপর প্রতিপক্ষের সমর্থকদের হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে গত ২৯ মে তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে পটিয়ার পূর্ব পিঙ্গলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট পেপার, বক্স ও সিল ছিনতাইয়ের অভিযোগে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। ফলে স্থগিত কেন্দ্রটি বাদে বাকী ১২৭ কেন্দ্রের ফল ঘোষণা করা হয়। এরমধ্যে ভাইস চেয়ারম্যান আবু ছালেহ মোহাম্মদ শাহরিয়ার (উড়োজাহাজ) পান ২৩ হাজার ৮৫০ ভোট ও এমদাদুল হাসান (বই) পান ২৩ হাজার ৭৩ ভোট। অন্যদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাজেদা বেগম শিরু (কলস) ২৪ হাজার ৮৯৪ ভোট ও সাজেদা বেগম (প্রজাপতি) ২৪ হাজার ৭৩১ ভোট পান। ওই কেন্দ্রের মোট ভোটার ৩ হাজার ৬১৫ ভোট। ফলে ভাইস চেয়ারম্যানের পদ দুটিতে ওইদিন ফল ঘোষনা স্থগিত করে বুধবার কেন্দ্রটিতে পুন:নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

সকাল ৮টা থেকে এই কেন্দ্রে স্বাভাবিকভাবে ভোটগ্রহণ চলতে থাকে। সকাল ১০ টা পর্যন্ত প্রায় ২৫ শতাংশ ভোটগ্রহণ শেষ হয়। এরমধ্যে উড়োজাহাজ প্রতীকের ব্যাজ পরে কিছু লোক ভোটকেন্দ্রের অদূরে স্থানীয় সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে। এসময় এক ভোটারের মাথা ফাটিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠে। সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে তাদের সাথেও বাকবিতন্ডা তৈরী হয়। পরে পুলিশ গিয়ে অবরোধকারীদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়।

পটিয়া থানার ওসি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশের টিম পাঠিয়েছি। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর পুনরায় ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। আহত ব্যক্তি একজন প্রার্থীর অনুসারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তার অনুসারীদের দাবি, তাদের গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে।’

বিডি প্রতিদিন/এএম

 



এই পাতার আরো খবর