ঢাকা, রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামে কাঁচা মরিচের কেজি হাজার টাকা
আজহার মাহমুদ, চট্টগ্রাম

বন্যায় ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপর্যয় নেমে আসার ফলে চট্টগ্রামের বাজারগুলোতে কাঁচা পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দামে পণ্য বিক্রি করছেন। এক একটি পণ্য স্বাভাবিক দামের চেয়ে কেজিপ্রতি ২০ টাকা থেকে ছয় গুণ পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। ফলে কাঁচাপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে।

চট্টগ্রামে এই মূহূর্তে সবচেয়ে আলোচিত পণ্যটি হলো কাঁচা মরিচ। তিন দিন আগে যে কাঁচা মারিচ খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি ১৮০-২৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে সেই মরিচ ৭২ ঘণ্টার ব্যবধানে বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে ১ হাজার টাকায়। আবার কোনো কোনো বাজারে একটি কাঁচা মরিচ বিক্রির জন্য নেই। এরবাইরেও টমেটো, বরবটি, কাঁকরোল, গাজরসহ অন্যান্য পণ্যও কেজিপ্রতি ২০ টাকা থেকে ১’শ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নগরীর কর্ণফুলী বাজার, কাজীর দেউড়ি ও চকবাজারের একাধিক ব্যবসায়ীর সাথে কাঁচাপণ্যের দাম নিয়ে কথা হয়। তারা বলছেন, বন্যার কারণে পরিবহণ সংকটে পণ্য সরবরাহ কমে গেছে। বগুড়া, ফরিদপুর, জামালপুরসহ উত্তরের যেসব জেলা থেকে চট্টগ্রামের বাজারে পণ্য আসে মহাসড়ক অচল হওয়ায় তা বন্ধ হয়ে গেছে। একারণে বাজারে পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে এবং দামও বাড়তি।

যদিও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যেসব পণ্যের সরবরাহ নেই কেবল সেগুলো নয়, বন্যা সংকট পুঁজি করে বেশিরভাগ কাঁচাপণ্যের দাম বাড়িয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। পাইকারি বাজার রিয়াজউদ্দিন বাজারে কাঁচা মরিচ কেজিপ্রতি ৫’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যেটা খুচরা বাজারে এসে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। আবার সংকটময় মূহূর্ত হওয়ায় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোরও এদিকে নজর দেয়ার সময় নেই।

কাঁচামরিচ ছাড়াও চট্টগ্রামের বাজারে রবিবার গাজর কেজিপ্রতি ২’শ, কাঁকরোল ১২০, বেগুন ১৩০, টমেটো ৪’শ, ঝিঙ্গে ১১০, ঢেঁডস ৮০, পটল ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এসব সবজি তিনদিন আগে ২০ টাকা থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত কম দামে বিক্রি হয়েছে। এর বাইরে বাজারে পেঁয়াজ ১১০, রসুন ২২০ ও আদায় ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।

বাড়তি দামের বিষয়ে জানতে চাইলে কর্ণফুলী বাজারের সবজি বিক্রেতা আলী হোসেন বলেন, ‘পাহাড়তলী, রিয়াজউদ্দিন বাজারে গিয়ে দেখুন। সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। আর মরিচ তো নেইই। পাইকারি বাজারে বেড়ে গেলে আমরা কিভাবে কম দামে বিক্রি করবো। এখন হয় বাড়তি দামে বিক্রি করতে হবে, নয় ব্যবসা বন্ধ রাখতে হবে।’

এ প্রসঙ্গে রিয়াউদ্দিন বাজার আড়তদার কল্যাণ সমিতির সভাপতি ফারুক শিবলী বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে তিনদিন ধরে গাড়ি আটকে আছে। অনেক সবজি পচে গেছে। চট্টগ্রাম পর্যন্ত আসতে পারছে না। একারণে সংকট দেখা দিয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক হলে দাম কমে যাবে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপপরিচালক ফয়েজ উল্ল্যাহ বলেন, ‘আমরা নিয়মিত বাজার তদারকি করছি। এই মূহূর্তে কাঁচাপণ্যের সরবরাহ কিছুটা কম এটা ঠিক। কিন্তু যে পণ্য থাকবে না, সেটা প্রয়োজনে বিক্রি বন্ধ থাকবে। পণ্য অল্প থাকলে বাড়তি দাম নেয়ার সুযোগ নেই। আমরা খোঁজ খবর নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই ব্যবস্থা নিবো।’

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন



এই পাতার আরো খবর