ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামে বন্যায় তলিয়ে গেছে খামারিদের স্বপ্ন, আর্থিক ক্ষতি প্রায় ২১ কোটি টাকা
ইমরান এমি, চট্টগ্রাম
ফাইল ছবি

চট্টগ্রামে স্বরণকালের ভয়াবহ বন্যায় মীরসরাই, সীতাকুণ্ড ও ফটিকছড়িতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন খামারিরা। এসব উপজেলায় ঘরবাড়ি-দোকানপাটসহ নানা স্থাপনার পাশাপাশি বন্যার পানিতে ভেসে গেছে গবাদি পশু-পাখির তিন শতাধিক খামার। এতে হাজার হাজার গবাদি পশু-পাখির মৃত্যু হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে খামারিদের স্বপ্ন। নষ্ট হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখির খাবারও। 

জেলা প্রাণি সম্পদের তথ্যানুযায়ী, জেলার সাতটি উপজেলায় বন্যায় আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ২০ কোটি ৯৭ লাখ ২৬ হাজার ২শ’ টাকা। এরমধ্যে গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির খামার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে ৩ কোটি ৫২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। পশুপাখির মৃত্যু ও দুধ-ডিম বিনষ্টজনিত ক্ষতি হয়েছে ১৬ কোটি ৯ লাখ ৩২ হাজার ৭শ’ টাকা।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত বন্যায় ডেইরি ও পোল্ট্রি খাতসহ সব মিলিয়ে ২০ কোটি ৯৭ লাখ ২৬ হাজার টাকার মতো আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত খামারীদের তালিকা করছি, ত্রাণ উপদেষ্টাও আসছেন। 

তিনি বলছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি আমরা জেলা প্রশাসনের সাথে মিলে ক্ষতিগ্রস্তদের উপজেলা ভিত্তিক তালিকা করছি। অসুস্থ পশু পাখির চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য উপজেলাগুলো আমাদের টিম কাজ করছে। 

বন্যাকবলিত ফটিকছড়ির খামারি জমির উদ্দিন বলেন, “আমাদের এলাকায় কখনোই এত পানি হয় না। যেদিন পানিতে আমার খামার ভেসে যায় সেদিনও ফজরের নামাজের পর দেখেছি পানি অনেক নিচে, তাই নিশ্চিন্তে ঘুমিয়েছি। কিন্তু ঘণ্টা দুয়েক পর ঘুম থেকে উঠে দেখি সব ভেসে গেছে। সব মুরগি মরে গেছে, খামারে থাকা খাবারও নষ্ট হয়ে গেছে।”

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাম্প্রতিক বন্যায় চট্টগ্রামে অন্তত সাতটি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব এলাকায় পোল্ট্রি ও ডেইরি খাতে সব মিলিয়ে ২০ কোটি ৯৭ লাখ ২৬ হাজার ২শ’ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। ২৩২টি গবাদি পশুর খামার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ২ কোটি ৭৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ১২৪টি হাঁস-মুরগীর খামারের আর্থিক ক্ষতি ৭৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। বন্যায় মৃত গবাদি পশুর পাখির মধ্যে ১৭১টি গরু, ১০টি মহিষ, ৬৭টি ছাগল, ৮টি ভেড়া, ৫ হাজার ৮১৬টি হাঁস ও ৩ লাখ ১৮ হাজার ১৩২টি মুরগী। সাতটি উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৯টি ইউনিয়ন। এর বাইরে পশুপাখির ৫৭ দশমিক ৭ টন দানাদার খাবার বাবদ আর্থিক ক্ষতি ৩১ লাখ ৬২ হাজার টাকা। নিবষ্ট খড়ের আর্থিক ক্ষতি ৩১ লাক ৯ হাজার ৫০০ টাকা। বিনষ্ট ঘাসের আর্থিক ক্ষতি ৭২ লাখ ৪২ হাজার টাকা। এসব উপজেলায় পশুপাখির মৃত্যু বাবদে আর্থিক ক্ষতি ১৪ কোটি ৬১ লাখ ৬৪ হাজার ২০০ টাকা। দুধ ও ডিম বিনষ্টজনিত আর্থিক ক্ষতি ১ কোটি ৪৭ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা।  

বিডি প্রতিদিন/একেএ



এই পাতার আরো খবর