ঢাকা, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের ৮ প্রবাসীর দুর্বিষহ জীবন সৌদির কারাগারে
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে ও আহতদের সুস্থতায় কামনায় গত ১৬ আগস্ট দোয়া মাহফিল এবং আলোচনা সভার আয়োজন করেছিলেন সৌদি আরবের আবহা ও মাহাইল প্রবাসীরা। সেখানে বহু বাংলাদেশি প্রবাসী জড়ো হয়েছিলেন। পরে সেখানে ‘আইন অমান্যের’ অভিযোগে ৮ বাংলাদেশি প্রবাসীকে গ্রেফতার করে সৌদি পুলিশ। 

গ্রেফতারকৃতরা হলেন চট্টগ্রামের বাঁশখালীর জয়নুল আবেদীন, রহমত উল্লাহ, খলিলুর রহমান ও ওমর ফারুক, সাতকানিয়ার সামিউল ইসলাম, মোহাম্মদ ইউসুফ, সেলিম উল ইসলাম ও বান্দরবানের মো. আশরাফুল ইসলাম। তাদের মধ্যে কয়েকজন পরিবারসহ সৌদি আরবে আছেন।

শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতার সেই ৮ প্রবাসীর মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন তাদের স্বজনরা। সেখানে গ্রেফতার প্রবাসীদের স্ত্রী, মা, সন্তান স্বজনসহ বেশ কয়েকজন প্রবাসীও অংশ নেন। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন গ্রেফতার প্রবাসী জয়নুল আবেদীনের মেয়ে মিফতাহুল জান্নাত জেসি। 

তিনি বলেন, আমার বাবা ১৫ বছর ধরে সৌদি আরবে আছেন। তিনিই আমার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। এখন তিনি ছাত্র আন্দোলন নিহত শহীদ আর আহতদের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে সৌদি আরবে গ্রেফতার হয়েছেন। আজ অনেকদিন বাবার কোনো খবর পাচ্ছি না। আমাদের প্রতিটি মুহূর্তই কাটছে যন্ত্রণায়।

জয়নুল আবেদীনের স্ত্রী রুবি আক্তার ডেইজি বলেন, স্বামী সৌদি আরবের কারাগারে বন্দী আজ ২২ দিন ধরে। তিন মেয়ে আর এক ছেলেকে নিয়ে আমার এক একটা দিন কাটছে এক একটা বছরের মতো। আমার স্বামীসহ গ্রেফতার ৮ প্রবাসীকে মুক্তির জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকাকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এছাড়াও মানববন্ধনে বক্তব্য দেন গ্রেফতার প্রবাসী হাফেজ রহমত উল্লাহর ভাগ্নে এহসানুল হক, মেয়ে তাহমিনা আকতার আর বোন তাহেরা বেগম, সেলিম উল ইসলামের ছেলে মো, কাউসার, মেয়ে সামিরা সুলতানা সানজি, মো. ইউসুফ সিকদারের স্ত্রী উসরাতুল আকতার, ছেলে আবদুল্লাহ সাহাল ও মেয়ে সুমাইয়া সুলতানা। 

এ সময় তারা বলেন, গ্রেফতার প্রবাসীরা আমাদের কারও ভাই, কারও স্বামী, কারও বাবা। প্রবাসে থেকে তারা সর্বাত্মকভাব ফ্যাসিবাদ সরকারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতাকে সমর্থন দিয়েছেন। ছাত্র-জনতার ডাকে সাড়া দিয়ে তারা সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ রেখেছিলেন। ছাত্র-জনতার চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের পর দেশ গঠনে তারা আবারও রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশ গঠনে অবদান রাখতে শুরু করেন।

ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের জন্য দোয়া মাহফিল এবং স্মরণসভা করতে গিয়েই এই প্রবাসীরা গ্রেফতার হয়েছেন জানিয়ে স্বজনেরা আরও বলেন, আমরা পরিবারের সদস্যরা ও আত্মীয়-স্বজন আর্থিকভাবে প্রবাসী সদস্যদের ওপর নির্ভরশীল। পরিবারের উপার্জনাক্ষম সদস্যের গ্রেফতারের ফলে আমাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমাদের আকুল আবেদন, আমাদের স্বজনদের মুক্তির ব্যবস্থা করুন।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত



এই পাতার আরো খবর