ঢাকা, শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

করোনা রোগীর সেবায় প্লাজমা ব্যাংক স্থাপন করল নারায়ণগঞ্জ পুলিশ
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

দেশের করোনা পরিস্থিতিতে রাজধানী ঢাকার পওে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে নারায়ণগঞ্জের স্থান। ইতোমধ্যে এই জেলায় করোনায় আক্রান্ত ৫ হাজার ছাড়িয়েছে।

করোনার এই পরিস্থিতিতে যেখানে সবাই ঘরে নিরাপদে থাকছেন, সেখানে পুলিশ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। আর এই কাজ করতে গিয়ে করোনার হটস্পট নারায়ণগঞ্জে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১৯২ জন পুলিশ। 

তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৪০ জন। বাকিরা পুলিশ লাইন আইসোলেশন সেন্টারে এবং বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সুস্থ হওয়া পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে রক্তের প্লাজমা নিয়ে ইতোমধ্যে একটি প্লাজমা ব্যাংক তৈরি করা হয়েছে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে। 

এই প্লাজমা শুধু আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের জন্য নয়, যে কোনও সাধারণ রোগীকেও সরবরাহ করা হবে, যদি তার রক্তের গ্রুপের সঙ্গে মিল থাকে। ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগটি গ্রহণ করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম পিপিএম (বার)। 

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্লাজমা ব্যাংকটি তৈরি করেছি শুধু পুলিশের চিকিৎসার জন্য নয়। আমরা ইতোমধ্যে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করোনায় আক্রান্ত সাধারণ রোগীকেও প্লাজমা দিয়েছি। দেশে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশই প্রথম এই প্লাজমা ব্যাংক তৈরি করছে। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ করোনাকালীন বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করেছে। 

তিনি বলেন, লকডাউনকালীন আমরা নারায়ণগঞ্জের নিম্ন আয়ের মানুষদের মাঝে বিভিন্ন সময় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছি। এছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন কার্যক্রম পালন করেছি। প্রতিটি মার্কেটে স্বেচ্ছাসেবক কমিটি আছে। তাদের মাধ্যমে আমরা সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানা না হলে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানাও করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, করোনার হটস্পট নারায়ণগঞ্জে লকডাউন শুরুর পর থেকে তা কার্যকরে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থানে ছিল জেলা পুলিশ। লোকসমাগম ঠেকাতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয় সে সময়। ওই সময় যাতে কোনো ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জ থেকে বের হতে না পারে এবং প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য কঠোর অবস্থানে ছিল পুলিশ। কোনও যানবাহন বিনা কারণে প্রবেশ ও বের হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ সেগুলোকে ফিরিয়ে দিয়েছে। 

তিনি জানান, এছাড়াও লকডাউন কার্যকরে নারায়ণগঞ্জের সাতটি থানাকে সাতটি জোনে ভাগ করে সাতজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। বিনা প্রয়োজনে রাস্তায় বের হওয়া লোকজনকে আইনের আওতায় আনা ও জরিমানা করা হয়। লকডাউনকালে জেলার গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও বুড়িগঙ্গা নদীপথ ব্যবহার করে মানুষ বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করে। সেই পথগুলোতে বাড়ানো হয়েছিল চেকপোস্ট। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন থানায় করোনার উপসর্গ নিয়ে ভুগতে থাকা ব্যক্তিদের ফোন পেলে এবং যারা আক্রান্ত হচ্ছে তাদের সবাইকে শুরু থেকেই সেবা দিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।

পুলিশ সুপার বলেন, করোনার এই সময়ে পুলিশ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সম্পর্কের এক নতুন মেলবন্ধন তৈরি হয়েছে বলে আমি মনে করি। মহামারীর এ সময়ে দেশব্যাপী পুলিশের কার্যক্রমে যে সুনাম তৈরি হয়েছে, তার জন্য পুলিশের একজন কর্মকর্তা হয়ে গর্ববোধ করছি। আমরা পুলিশের অর্জিত এই সুনামকে ধরে রাখতে চাই। এই সুনামকে পুঁজি করেই নতুন করে সাজাতে চাই এই বাহিনীকে। 

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসীর



এই পাতার আরো খবর