ঢাকা, বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

পাড়া-মহল্লার উন্নয়ন কাজ নিয়ে লিটনের ক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
বক্তব্য দিচ্ছেন এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন

পাড়া-মহল্লার রাস্তা সংস্কার ও নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করার পরেও সেগুলো শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিটি মেয়র ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। 

বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময়ের অংশ হিসেবে বুধবার গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন লিটন। 

সভায় লিটন বলেন, ‘রাজশাহীতে যে উন্নয়নমূলক কাজগুলো আপনারা দেখেছেন, যতোটুকু পেরেছি, করেছি। তার মধ্যে ত্রুটি হয়নি, নিম্নমানের হয়নি-এসনটা আমি বলবো না। হতেই পারে। বিশেষ করে ছোট ছোট গলিপথগুলো করার জন্য যে প্রতিষ্ঠানের কথা শুনে আমরা বিভ্রান্ত হয়ে ঢাকার একটা কোম্পানি, তাদের  দায়িত্ব দিয়েছিলাম করবার জন্য। সবচেয়ে বেশি ডুবিয়েছে ওই একটি ফার্মই আমাদের। পাড়া-মহল্লায়, অলিতে গলিতে ছোট ছোট রাস্তা, তিন ফুট-চারফুট প্রশস্ত রাস্তা। প্রায় ৩ বছর আগে তাতে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছিল। বারে বারে তাকে ডেকে নিয়ে আসার পরেও তিনি কাজগুলো শেষ করলেন না এবং আমাদের জনগণের মুখে রেখে গেলেন।’

ওই মতবিনিময়ে তিনি বলেন, ‘স্বাভাবিক, মানুষতো গলিপথ দিয়ে বেরিয়ে প্রশস্ত রাস্তায় উঠবে। ওখানেই তো ভোটার। প্রথমেই যদি তার মনটা খারাপ হয়ে যায়, আমার গলিটা আজো ঠিক হলো না, এটা তো করতেই পারে সে। কাজেই এটা একটা সংকট আমাদের জন্য। এটা সমাধান করার বহু চেষ্টা করেছি। ওকে ডেকে নিয়ে এসে, বুঝিয়ে, ধরে নানাভাবে। এখন তাকে বাদ দিয়ে রিটেন্ডার করতে গেলে উনি মামলায় যাবেন এই হুমকি দিয়ে রেখেছেন। আপাতত আমরা থেমে আছি। নির্বাচনের পর তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে আমরা নতুনভাকে আবার যাত্রা শুরু করবো। এজন্য আমি ক্ষমা প্রার্থী নগরবাসীর কাছে।’ 

নগর ভবনের সিটি হলরুমে মতবিনিময় সভায় খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ২০১৯ সালে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রকল্পে সরকারি বরাদ্দ প্রায় ২৭০০ কোটি টাকা। করোনার কারণে দেড় বছর আমরা কোন কাজ করতে পারিনি। সে সময় মানুষকে বাঁচাতে কাজ করতে হয়েছে। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং যুদ্ধের প্রভাবে ডলার দাম বৃদ্ধি, নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়া সহ সারাবিশ্বে নাভিশ্বাস এক অবস্থা দেখা দেয়। যার কারণে রাজশাহীতেও উন্নয়ন ব্যাহত হয়েছে। ওই প্রকল্পের মাত্র ১২০০ কোটি টাকা ব্যয় করতে পেরেছি। যার উন্নয়ন আপনাদের সামনে দৃশ্যমান। প্রকল্পে আরও ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। আমি নির্বাচিন হলে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়ে আরও অর্থ বরাদ্দ নিয়ে আসবো।

রাসিক মেয়র বলেন, রাজশাহীকে যানজট মুক্ত শহর হিসেবে গড়ে তুলতে পাঁচটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। দুইটির টেন্ডার ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। আরও তিনটি প্রক্রিয়াধীন। এগুলোর কাজ নির্বাচনের পর শুরু হবে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাস্টারপ্ল্যান করতে চাই। এটি বুয়েটের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক থাইল্যান্ড বা সিঙ্গাপুরের কোন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে কাজটি করা হবে।

তিনি বলেন, রাজশাহী সিটি এলাকা ৯৬ বর্গকিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে প্রায় ৩৫০ বর্গকিলোমিটার থেকে ৪০০ বর্গকিলোমিটার করতে চাই। সম্প্রসারিত এলাকার কৃষি জমি নষ্ট না করে প্রশস্ত ড্রেন, রাস্তা সহ নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে চাই।

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামালের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বেগম আখতার জাহান ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু। 

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ



এই পাতার আরো খবর