ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

হলফনামায় খোকনের সম্পদ বেশি, বার্ষিক আয়ে এগিয়ে তাপস
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশাল সিটি নির্বাচনে ৬ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাত এগিয়ে থাকলেও বার্ষিক আয় বেশি জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপসের। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নগদ প্রায় আড়াই কোটি টাকা রয়েছে। তার বার্ষিক আয় সাড়ে ১০ লাখ টাকা। 

জাপা প্রার্থীর বার্ষিক আয় প্রায় ৮০ লাখ টাকা। নগদ প্রায় টাকা ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা রয়েছে তার। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থীর বার্ষিক আয় প্রায় ১৪ লাখ এবং জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চুর বার্ষিক আয় প্রায় ১৫ লাখ টাকা। দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপনের বার্ষিক আয় প্রায় সাড়ে ৪ লাখ এবং আলী হোসেন হাওলাদারের আয় সাড়ে ৮ লাখ টাকা। মনোনয়নপত্রের সাথে প্রার্থীদের দেয়া হলফনামায় এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। 

পেশায় ব্যবসায়ী খোকন সেরনিয়াবাত খুলনায় ইউনিয়ন এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীক অংশিদার এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক। যৌথ ব্যবসায় ১ হাজার ৬৭২ টাকা, ব্যাংক আমানত থেকে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৫৭২ টাকা এবং অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বছরে ৭ লাখ ৮৩ হাজার ১৫০ টাকা আয় দেখিয়েছেন তিনি। 

নগদ ২ কোটি ৫০ লাখ ৮৩ হাজার ৮৭২ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৫৭২ টাকা, কোম্পানীর ২০ লাখ টাকার শেয়ার, ৩২ লাখ মূল্যের ১ টি মোটর গাড়ি, ১০ ভরি স্বর্ণালংকার, ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকার ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী, ২ লাখ ৫৪ হাজার টাকার আসবাবপত্র ও লাইসেন্সকৃত দুটি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে খোকন সেরনিয়াবাতের। খুলনায় ৪০ লাখ টাকা মূল্যের ৪ তলা একটি ভবন, ঢাকার ধানমন্ডিতে ১৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের ১ টি অ্যাপার্টমেন্ট এবং উত্তরায় ১৪ লাখ টাকা মূল্যের ৬ টি অ্যাপার্টমেন্টের কথা উল্লেখ রয়েছে হলফনামায়। তার স্ত্রী লুনা আবদুল্লাহ’র নগদ ১ কোটি ৩৫ লাখ ৮৪ হাজার ৫ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ১২ হাজার ৩৯৭ টাকা, ৪৯ লাখ টাকা মূল্যের ১ টি মোটর গাড়ি, ২০ ভরি স্বর্ণালংকার, ৫০ হাজার টাকার ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী এবং আড়াই লাখ টাকার আসবাবপত্র রয়েছে। 

জাপা প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস ঢাকায় ইওকোহামা লেবেলস্ এন্ড প্রিন্টিং (বিডি) কোম্পানী লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বরিশালের সাউথ এ্যাপোলো মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল লিমিটেড, সাউথ এ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক কমপ্লেক্স এবং সাউথ এ্যাপোলো প্রোপার্টিজ লিমিটিডের পরিচালক। ব্যবসা থেকে তার বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা, চাকরির বেতন-ভাতা বাবদ ৭৬ লাখ ৯৪ হাজার ৯২৭ টাকা এবং সঞ্চয়ী আমানতের ১ হাজার ১৯৬ টাকা লভাংশ সহ বছরে আয় ৮০ লাখ টাকার বেশী। প্রার্থীর উপর নির্ভরশীলদের আয় দেখানো হয়েছে ২৮ লাখ ২০ হাজার টাকা। 

তাপসের নগদ ২ কোটি ২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৬ লাখ ৫৩ হাজার ২২৩ টাকা রয়েছে। ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকার ডায়াগনস্টিক শেয়ার, ৩৪ লাখ ৩৪ হাজার টাকার মেডিকেল কলেজের শেয়ার এবং প্রোপার্টিজ ব্যবসায় ১৫ লাখ টাকার বিনিয়োগ করেছেন তাপস। এছাড়া ৩৮ লাখ টাকার মূল্যের মোটর গাড়ি, ৬০ তোলা স্বর্ণালংকার, ইলেক্ট্রনিক ও আবসাবপত্র রয়েছে। ওয়ারিশসূত্রে জমি ও ৫ তলা ভবনের অংশ এবং যৌথ মালিকানায় ২ একরের বেশী কৃষি জমি রয়েছে তার। একটি বেসরকারী ব্যাংকে ১৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৫৫ টাকার গৃহ সংস্কার ঋণ রয়েছে তার। স্ত্রীর নামে ব্যাংকে ১০ লাখ টাকা এবং নির্ভরশীলদের নামে ৭২ হাজার টাকা উল্লেখ করেন তাপস।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিমের মাদ্রাসা শিক্ষকতা পেশায় বার্ষিক আয় ৭ লাখ ৬ হাজার টাকা। ১ টি বাড়ি, ২ টি অ্যাপার্টমেন্ট এবং কৃষি ও অকৃষি জমি রয়েছে তার। অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বছরে ৩ লাখ ৬ হাজার টাকা এবং ব্যবসা ও কৃষি থেকে ৪ লাখ ৫ হাজার টাকা আয় সহ বছরে তার মোট আয় ১৪ লাখ টাকার বেশি। নগদ ৪৩ লাখ ৭৪ হাজার ৫১৬ টাকা এবং ব্যাংকে ১ লাখ ২১ হাজার ৭৬৯ টাকা জমা রয়েছে তার। এছাড়া ইলেক্ট্রনিক এবং আসবাবপত্রের তালিকা দিয়েছেন হলফনামায়। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে ঋণ নেই তার। 

জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চুর পেশা ব্যবসা। আবাসিক হোটেল ব্যবসায় ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫০ টাকা, ঘর ভাড়া থেকে ৬ লাখ ৬ হাজার ৯৮০ টাকা এবং দোকান ভাড়া বাবদ ৬ লাখ ২৩ হাজার ৬৬০ টাকা সহ তার বার্ষিক আয় প্রায় ১৫ লাখ টাকা। নির্ভরশীলদের চাকরি থেকে বছরে আয় ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। একটি প্রাইভেটকার, একটি মোটর সাইকেল, ইলেক্ট্রনিক ও আসবাবপত্রের হিসেব দিয়েছেন তিনি। তার ব্যবসায় মূলধন ৫১ লাখ ১৯ হাজার ৭ শ টাকা। স্ত্রীর নগদ ৩ লাখ টাকা, ছেলের নামে ব্যাংকে ছেলের জমা ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং উভয়ের ১৮ ভরি স্বর্ণালংকার হলফনামায় উল্লেখ করেন তিনি। 

বিএনপি’র প্রয়াত সাবেক মেয়রের ছেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপন হলফনামায় নিজেকে ব্যবসায়ী উল্লেখ করেছেন। নগদ ৯ লাখ ৪৯ হাজার ৪০৫ টাকা, ব্যাংকে জমা ১২ হাজার ১৬৫ টাকা এবং রিভার আইল্যান্ড ইন্টিগ্রেশন লিমিটেডে ১ কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার রয়েছে তার। ২৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের একটি মাইক্রোবাস এবং ব্যবসায় ৭ লাখ ৮ হাজার ৫৪৫ টাকা বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করেন রূপন। ব্যবসায় বছরে ৪ লাখ ৩২ হাজার ২২১ টাকা আয় দেখিয়েছেন তিনি। এছাড়া কৃষি ও অকৃষি জমি দেখিয়েছেন তিনি। স্ত্রী কিংবা নির্ভরশীলদের নামে কোন সম্পদ রূপনের হলফনামায় উল্লেখ নেই।

আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী পেশায় ব্যবসায়ী আলী হোসেন হাওলাদারের বাড়ি ও দোকান ভাড়া বাবদ ২ লাখ ১০ হাজার টাকা এবং ব্যবসায় ৬ লাখ ৩৭ হাজার ১৩ টাকা সহ মোট বার্ষিক মোট আয় সাড়ে ৮ লাখ টাকা। নগদ ৫০ হাজার টাকা, ব্যাংকে জমা ১৮ লাখ টাকা, দুটি ট্রাক, একটি মোটরগাড়ি, দুটি মোটরসাইকেল, ১০ ভরি স্বর্ণালংকার, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র রয়েছে তার। দোতলা একটি ভবন সহ পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া আড়াই একর কৃষি ও অকৃষি জমি রয়েছে আলী হোসেনের। একটি বেসরকারী ব্যাংকে ৯ কোটি টাকা ঋণের কথা হলফনামায় উল্লেখ করেন তিনি।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন



এই পাতার আরো খবর