ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

ভোটবিহীন সরকারকে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে: ফারুক
নিজস্ব প্রতিবেদক

আন্দোলনের মাধ্যমে ‘ভোটবিহীন’ সরকারকে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে এক মানববন্ধন কর্মসূচি সরকারের দমনপীড়নের প্রসঙ্গ টেনে এই হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, আপনারা লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ মেরেছেন, আপনারা গণতন্ত্র হত্যা করেছেন, আপনারা ৭ জানুয়ারি ভোটবিহীন নির্বাচন করেছে নিজেই ভাইয়ে ভাইয়ে ডামি নির্বাচন। নির্বাচনের আগেও অনেক হুমকি-ধমকি দিয়েছিলেন, এখনো আবার হুমকি দিচ্ছেন। আন্দোলনে দাবি যতদিন না প্রতিষ্ঠা হবে, যতদিন না বাংলাদেশে আমার ভোট আমি দেবো ততদিন পর্যন্ত এই সংগ্রাম বিএনপিসহ সমমনা দলের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। জেল-জুলুম দিয়ে, মামলা দিয়ে আপনি বিএনপিকে ঘরে বসিয়ে রাখতে পারবেন না। ইনশাল্লাহ আন্দোলন কত প্রকার কি কি তা এই ভোটবিহীন সরকারকে দেখিয়ে দেয়া হবে।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী নবীন দলের উদ্যোগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে এই মানবন্ধন হয়।

জয়নুল আবদীন ফারুক বলেন, ওবায়দুর কাদের সাহেব, পররাষ্ট্র মন্ত্রী …আপনারা টিআইবি (ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ) বলেন, বিএনপির দালাল। আমার মনে হয়, দুইদিন পরে সাবেক কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক (আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য) দালাল বলা শুরু করবেন। কারণ যারা আপনাদের বিরোধিতা করে তারাই আপনাদের শত্রু… আপনারা নিজেদের মনে করেন গণতন্ত্রের লোক, নিজেদেরকে মনে করেন স্বাধীনতার স্বপক্ষের লোক। কিন্তু সেই কাজটি আপনারা করেন না। আপনারা এখন রাষ্ট্রীয় যন্ত্র দিয়ে আমাদেরকে সাময়িক দাবিয়ে রাখবেন। ইনশাআল্লাহ পৃথিবীর ইতিহাস কথা বলেন, স্বৈরাচার কোনোদিনও পুলিশ দিয়ে গণতন্ত্রকামী মানুষকে দাবিয়ে রাখতে পারে না। যারা বিএনপিকে বলেন, হতাশ হয়েছে, যারা বিএনপিকে বলেন, সাংগঠনিক শক্তি নাই… তাদেরকে বলি, শুধু একদিনের জন্য পুলিশকে নিরপেক্ষ রেখে মাঠে আসেন… কে জিতে কে হারে একটু দেখি। বিজয় জনগনের হবেই হবে।

কারাগারে নির্যাতনে চিত্র তুলে ধরে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেন, বর্তমানে কারাগারে ধারণ কথা ৪১ হাজার। বর্তমান কারাগারে বন্দির সংখ্যা লক্ষাধিকের বেশির। আমাদের একজন ছাত্র নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শুধুমাত্র ছাত্র ঐক্যের মিটিং করার কারণে তাকে গ্রেফতার করে একটি মামলা দিয়েছিলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সদস্য সচিব আমান উল্লাহ আমানকে এখানে পুলিশ মারার কেইস দিয়েছে। এভাবে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীর যারা রাজপথে সংগঠিত করতে পারে, যারা নেতা-কর্মীদের নিয়ে রাজপথে হাজির হতে পারে, বেছে বেছে তাদেরকে গ্রেফতার করে কারাগারে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করছে। আমাদের সেই ছাত্র নেতাসহ অসংখ্যক নেতৃবৃন্দ যারা মুক্তি পেয়েছে তাদের কাছে শুনেছি বালতির মধ্যে পানি রেখে প্রশ্রাব করতে বলে তখন কারেন্টে শট লাগে … একটা সভ্য রাষ্ট্রে এটা চলতে পারে… আপনারা চিন্তা করতে পারেন? বিরোধী দলের অসংখ্য নেতা-কর্মীদের কারাগারে অমানবিক নির্যাতন করছে, হাত-পা নখ তুলে ফেলেছে, হাড্ডি-গুড্ডি ভেঙে ফেলেছে… । এই নির্যাতনের অভিযোগ দেখতে যখন বিচারকের একটি প্রতিনিধি দল ১৬ জানুয়ারি কারাগার ভিজিট করতে গেলেন সেখানে যাদের সাথে এই অমানবাবিকগুলো করা হচ্ছে, মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে তাদেরকে তখন অন্য বিল্ডিংয়ে সরিয়ে নিয়েছে। আজকে কারাগার যাদের শ্লোগান… রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ … তারা আজকে অন্ধকার করে ফেলছে। তিনি বলেন, আমরা আজকে গণতন্ত্রকামী জনগনকে একটা আহ্বান জানাতে চাই, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও মতো ব্যক্তি, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, জহির উদ্দিন স্বপন তারা কি অপরাধী, সন্ত্রাসী, ব্যাংক লুটেরা, অর্থপাচারকারী, ঋণখেলাপী? না, তারা রাজনীতিবিদ… অনেকে সাবেক এমপি, সাবেক মন্ত্রী। এখনো যদি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় তারাই জনগণের ভোটে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করবেন। পুলিশ ভাইদের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে, আপনারা রাষ্ট্রীয় বাহিনী, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান… আপনারা তাদের হয়ে কাজ করবেন না, মানুষের প্রতি অবিচার করবেন না। অনতিবিলম্বে সকল রাজবন্দির মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবির জানাচ্ছি।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন আহমেদে তালুকদারের সভাপতিত্বে ও মোহাম্মদ সোহেল রানার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, শিশু বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, কৃষক দলের ভিপি ইবরাহিম, তাঁতী দলের কাজী মনিরুজ্জামান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন



এই পাতার আরো খবর