ঢাকা, সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

অপহরণের পর যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে চেয়ারম্যান গ্রেফতার
কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার দেবিদ্বারে অপহরণের পর আবু সায়েম নামের এক যুবককে হত্যার অভিযোগে এক ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই ঘটনায় পলাতক চেয়ারম্যানের ছেলে মো. মামুন। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আটক চেয়ারম্যান উপজেলার গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম। একই ঘটনায় পলাতক রয়েছে তার ছেলে মামুন। নিহত সায়েম (৩৯) উপজেলার গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের চাষারপাড় গ্রামের আবদুর রহিম সরকারের ছেলে।

নিহত যুবক আবু সায়েমের শ্বশুর ছিদ্দিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, সোমবার (৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে আমার মেয়ের জামাই সায়েমকে অপহরণ করে চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমের ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে ৭-৮ জন। অপহরণের খবর পেয়ে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে আমরা তাকে খোঁজাখুঁজি করি। একপর্যায়ে বিকাল ৫টায় খোরশেদ চেয়ারম্যান আমাকে ফোনে জানায়, সায়েম তার ছেলে মামুনের সঙ্গে আছে। মামুন আমার জামাইয়ের কাছে যৌথ ব্যবসার যে টাকা পাবে সেই টাকা ফেরত দিলে ছেড়ে দেওয়া হবে। 

পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চেয়ারম্যান খোরশেদ আমাকে যাত্রাবাড়ির বাবুবাজার এলাকার একটি বাসায় সায়েমের সঙ্গে দেখা করায়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় মঙ্গলবার সকালে চেয়ারম্যানের বাড়িতে লেনদেনের বিষয়টি মীমাংসা করা হবে। আমি সায়েমকে আমার সঙ্গে নিতে চাইলে চেয়ারম্যান বলে ‘সায়েম তার জিম্মায় থাকবে’। সেখান থেকে তারা রাতেই সায়েমকে নিয়ে প্রাইভেটকারে দেবিদ্বার চলে আসে। প্রাইভেটকারে জায়গা না থাকায় আমি বাসে করে দেবিদ্বারে রওনা হই। কুমিল্লার ময়নামতি এলাকায় আসার পর রাত সাড়ে ১০টায় চেয়ারম্যান আমাকে ফোন দিয়ে জানায়, সায়েম চা খাওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে পালিয়ে গেছে।

রাত সোয়া ১টায় চেয়ারম্যান আবার ফোনে জানায়, সায়েম খুবই অসুস্থ তাকে আমি ও আমার স্ত্রী দেবিদ্বার সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি, তুমি দ্রুত হাসপাতালে আসো। আমি হাসপাতালে গিয়ে দেখি সায়েমের মরদেহ নিচে পড়ে আছে। মরদেহের চোখ-মুখ ফোলা, গলায় ও পিঠে অসংখ্য দাগ। থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে খোরশেদ চেয়ারম্যানকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

সায়েমের ছোট ভাই আবু কাউছার সরকার জানান, গত কয়েক বছর আগে আমার বড় ভাই ব্যবসার কাজে সাবেক চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমের ছেলে মামুনের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নেয়। পরে দুজন একসঙ্গে ব্যবসা শুরু করে। বর্তমানে ব্যবসার অবস্থা কিছুটা অবনতি হলে ওই টাকার জন্য মামুন আমার ভাইকে চাপ সৃষ্টি করলে তাকে ৭ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। বাকি টাকার জন্য একটি খালি চেক দেওয়া হয়। মামুন ওই চেক দিয়ে আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে আদালতে দুটি মামলা করে। ওই মামলা চলমান থাকাবস্থায় মামুন ও তার বাবা আমার ভাইকে সন্ত্রাসী দিয়ে অপহরণ করে। 

দেবিদ্বার থানার ওসি মো. নয়ন মিয়া বলেন, নিহত সায়েমের ভাই আবু কাউছার বাদী হয়ে চারজনের নামোল্লেখসহ ৭-৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার প্রধান আসামি চেয়ারম্যানের ছেলে মামুনসহ দুই আসামি মোস্তফা ও মিন্টু পলাতক। এছাড়াও ২য় আসামি সাবেক চেয়ারম্যান খোরশেদকে গ্রেফতার করেছে আদালত। তাকে আগামীকাল কারাগারে পাঠানো হবে। এই সায়েমের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত



এই পাতার আরো খবর