ঢাকা, রবিবার, ৩০ জুন, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

হারিয়ে গেছে ৩৬ গন্ডায় একশ আম কেনা-বেচার রীতি
নজরুল মৃধা, রংপুর

দুই দশক আগেও ৩৬ গন্ডায় অর্থাৎ ৩৬ হালিতে একশ (৪টায় এক হালি) আম বিক্রি হতো রংপুর অঞ্চলে। বর্তমানে হালি কিংবা গন্ডার কথা মানুষ ভুলে গেছেন। এ প্রজন্মের অনেকেই জানেন না গন্ডা হিসেবে আম বিক্রি এক সময় ছিল এই অঞ্চলের ঐতিহ্য। 

একসময় গন্ডা ছাড়া আম কেনা বেচার কথা ভাবাই যেত না। দিন পাল্টিয়েছে। গণনা  করে বিক্রির পদ্ধতির পরিবর্তে এসেছে কেজিতে বিক্রি। আম কেজি হিসেবে বিক্রি হবে দুই দশক আগে এমনটা ভাবাও যেত না।

প্রবীণদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, একসময় রংপুরের আমের হাটে ৩৬ গন্ডা (হালি) অর্থাৎ ১৪৪টি আমকে একশ হিসেবে আম পাইকারি বিক্রি হতো। শহরের ওই আম আবার বিক্রি হতো ৩২ গন্ডায় একশ অর্থাৎ ১২৮টি আমকে একশ বলা হত। ৮ হালিকে এক পোয়া, ১৬ হালিকে দুই পোয়া এবং ২৪ হালি আমকে তিন পোয়া বলা হতো। আধুনিকতার ছোঁয়া এবং উৎপাদিত আমের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় গন্ডার হিসাব মানুষ ভুলে গেছেন। এখন শুরু হয়েছে কেজির হিসাব। একধাপ এগিয়ে কয়েক বছর থেকে অনলাইনেও আমের ব্যবসা শুরু হয়েছে।

২১ জুন থেকে রংপুরে হাড়িভাঙ্গা আম আনুষ্ঠানিকভাবে কেনা-বেচা শুরু হয়েছে। এসব আম কেজি কিংবা মণ হিসেবে বেচা কেনা হচ্ছে। এই প্রজন্মের অনেকেই জানেন না একসময় এই আম ৩২ এবং ৩৬ গন্ডায় একশ হিসেবে বিক্রি হয়েছে।

সাহিত্য ও সমাজকর্মী প্রবীণ ব্যক্তি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বৈশাখ, জৈষ্ঠ মাসে হরেক রকমের আমে বাজার ভরপুর থাকত। শহরে যারা আম বিক্রি করতে আসত তারা বাউঙ্কায় করে পদাগঞ্জসহ অন্যান্য হাটে ৩৬ গন্ডায় একশ আম কিনে এনে শহরে ওই আম ৩২ গন্ডায় বিক্রি করতো। এখন হালি কিংবা গন্ডার প্রচলন উঠে গিয়ে কেজিতে আম বিক্রি হচ্ছে। ২০ বছর আগেও ৩৬ গন্ডায় একশ আম প্রকার ভেদে ২৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হতো। অতীতের ঐতিহ্য ধরে রাখতে কিছু কিছু আম গন্ডা অথবা হালিতে বিক্রি হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর