ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

অতিরিক্ত পলিতে নদীর তলদেশ ভরাট, পানিতে ভাসছে তিস্তা পাড়ের মানুষ
নজরুল মৃধা, রংপুর

চলতি বন্যা মৌসুমে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে একদিনও বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। তারপরও পানিতে ভাসছে তিস্তা পাড়ের পাঁচ জেলার মানুষ। এর কারণ কী হতে পারে তা নিয়ে নদী পাড়ের মানুষের মাঝে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এসব প্রশ্নের উত্তরে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, গত বছর অতিরিক্ত পলি এসে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় এমনটা হচ্ছে। ফলে অল্প পানিতেই বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবরে ভারতের একটি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায়  একদিনে ১ লাখ ৪০ হাজার কিউসেকের বেশি পানি প্রবেশ করেছে তিস্তার বাংলাদেশ অংশে। গত বছরের ৪ অক্টোবর পানি এসেছে ৮৭ হাজার কিউসেক। ওইদিন রংপুরের ৫ জেলায় রেড এলাট জারি করা হয়েছিল। প্রবল স্রোতে বাংলাদেশে ভেসে এসেছে ৬টি লাশ। রংপুর, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা এলাকায় এসব লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও বড় বড় মাছও ভেসে এসেছে। এত বড় মাছ এর আগে তিস্তা পাড়ের মানুষ দেখেনি। বেশ কিছু গাছও ভেসে আসতে দেখা গেছে। এছাড়া এসেছে লাখ লাখ টন পলি। এই পলিই বিপত্তি ঘটাচ্ছে এবার। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এমনিতেই প্রতিবছর উজান থেকে ২ কোটি টনের বেশি পলি নদীতে প্রবেশ করায় পানির স্তর কমে যাচ্ছে। গত বছরের প্রবল স্রোতে পলি এসেছে দুই কোটি মেট্রিক টনের ওপর। ফলে তিস্তার তলদেশ অনেকটা ভরাট হয়ে গেছে। ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও চলতি মৌসুমে দুই দফা বন্যায় ভেসেছে তিস্তা পাড়ের মানুষ। পানি বৃদ্ধির ফলে ক্ষেতের ফসল, বসতভিটা, রাস্তাসহ বিভিন্ন অবকাঠামোন ক্ষতি হয়েছে। 

এদিকে, পলি জমে চর জেগে উঠায় কাউনিয়া পয়েন্টেও বিপৎসীমা পরিবর্তন করা হয়েছে। ওই পয়েন্টে কয়েকদিন আগেও বিপৎসীমা ধরা হয়েছিল ২৮ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। সেটা বাড়িয়ে  কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ধরা হয়েছে ২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার। ৫৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি করে বিপৎসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর কারণও ওই পয়েন্টেও পলি জমে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়া। 

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, গত বছরের অক্টোবরে ভারতে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিপুল পরিমাণ পানি বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। ওই সময়ে ভেসে আসা পলিতে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে।  

তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর তিস্তায় দুই কোটি মেট্রিক টন পলি আসে। গত বছর এর পরিমাণ বেশি ছিল।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত



এই পাতার আরো খবর