ঢাকা, রবিবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া কমপ্লেক্সে হামলার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জে মানববন্ধন
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি :

ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপসহ সারাদেশে বিভিন্ন গণমাধ্যমের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন নারায়ণগঞ্জের গণমাধ্যম কর্মী ও সাধারণ জনগণ। এ সময় গণমাধ্যম কর্মীদের পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরাও মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। 

শনিবার নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়া শহীদ মিনারে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধনে অংশ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সন্ত্রাসীরা বিএনপির ব্যানারে আসছে। তারাই এ সকল মিডিয়ায় হামলা করছে। মত পার্থক্য থাকতেই পারে। তার জন্য কোনো সাংবাদিক অফিসে হামলা করা যাবে না। কেউ এগুলো করলে যেভাবে হাসিনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছি সেভাবে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবো। 

তিনি আরও বলেন, আমরা ওসমান পরিবারের মতো আপনাদের দমন করবো না। আপনাদের ওপর হামলা হলে আমরা প্রতিহত করবো। কিন্তু আপনাদের কাছে অনুরোধ, সত্য প্রকাশ করুন। আপনাদের পবিত্র কলমের কালিকে অপবিত্র করবেন না। 

মহানগর বিএনপি নেতা মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, আমরা জানি বিগত স্বৈরাচারী সরকার টয়লেট থেকে শুরু করে সংবাদপত্র কোথাও বাকি রাখেনি। সব জায়গায় তারা তাদের বাকশালি থাবা দিয়েছে। তারা সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছে। তিনি আরও বলেন, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার সুযোগ নেই। মিডিয়া দোষ করলে সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু আমরা আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারি না। আমরা অবিলম্বে এসকল দুর্বৃত্তদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। 

নারায়ণগঞ্জ জেলা গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম সুজন বলেন, আমরা দেখেছি কীভাবে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। তাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। আমরা মনে করি মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকার উদ্যোগ নেবে। আমরা দেখতে পারছি ৫ তারিখের পর থেকে সাংবাদিকদের ওপর হামলা হচ্ছে। আমরা সাংবাদিকদের নিরাপত্তার জন্য উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানাই। 

খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব এ বি এম সিরাজুল  মামুন বলেছেন, আমাদের অসুস্থ সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ছাত্র-জনতার রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি। যেকোনো মূল্যে এই দুর্বৃত্তায়ন আমাদের প্রতিহত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা এ হামলার নিন্দা জানাই। এসমস্ত কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। নয়তো আমরা সামনে অগ্রসর হতে পারবো না। আমাদের সহিষ্ণু হতে হবে। নয়তো আবার আমাদের আগের অবস্থানে চলে যেতে হবে। তখন মানুষ বলতে থাকবে স্বৈরশাসন ভাল ছিল। 

নারায়ণগঞ্জ মহানগর ইসলামি আন্দোলনের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ বলেছেন, গত ১৬ বছরে এমন কোনো শ্রেণি নেই যারা নির্যাতিত হয়নি। সাংবাদিকেরাও মামলার শিকার হয়েছে নির্যাতিত হয়েছে। সাগর রুনির ঘটনা আপনারা জানেন। তিনি আরও বলেন, ৫ তারিখের পর কিছু কুচক্রী মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। আমরা তাদের সাবধান করে দিতে চাই। এ নতুন বাংলাদেশ অনেক রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছে।

জামায়াতে ইসলামি বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ মহানগরের কর্ম পরিষদের সদস্য ও প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি হাফেজ আব্দুল মোমেন বলেছেন, সংবাদকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ আন্দোলনে সংবাদ প্রকাশ করেছে। একটা মহল সবসময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য কাজ করে। তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। সংবাদকর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। এ সকল ঘটনায় যারাই জড়িত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি তাদের বিচার চায়। 

নারায়ণগঞ্জ মহানগর পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুশীল দাস বলেছেন, ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়ায় যে হামলার ঘটনা ঘটেছে এটা কোনো সুস্থ রাজনৈতিক দল বা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ হতে পারে না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় একটি সরকার আসবে একটি যাবে। আমরা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে এর সুষ্ঠু বিচার চাইছি। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপি নেতা মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব এ বি এম সিরাজুল মামুন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, নারায়ণগঞ্জ জেলা গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম সুজন, জামায়াতে ইসলামি বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ মহানগরের প্রচার সম্পাদক হাফেজ আব্দুল মোমেন, বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক কেন্দ্রীয় কমিটির সেক্রেটারি সামন হোসেন, বন্দর প্রেসক্লাবের সভাপতি কমল খান, ফতুল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুর রহিম, বাংলাদেশ প্রতিদিনের রূপগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি হানিফ, কালের কণ্ঠের সোনারগাঁ উপজেলা প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান নূর, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সিদ্ধিরগঞ্জ এম এ শাহীন,সোনারগাঁ উপজেলা প্রতিনিধি আলামিন, এশিয়ান টিভির জেলা প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি প্রদীপ দাস, নারায়ণগঞ্জ মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুশীল দাস, সহ সভাপতি ও সাংবাদিক উত্তম সাহা, যুগ্ম সম্পাদক হিমু সাহা, কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি ও নিউজ টোয়েন্টিফোর টিভির জেলা প্রতিনিধি দিলিপ কুমার মন্ডল, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি নোমান চৌধুরি সুমনসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সাংবাদিকরা।

বিডিপ্রতিদিন/শআ/কবিরুল



এই পাতার আরো খবর