ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) মারধর ও হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুরের ঘটনায় সব বিভাগের চিকিৎসা সেবা বন্ধ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। রবিবার সকাল থেকেই নিরাপত্তাহীনতায় জরুরি বিভাগের চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেন তারা।
এতে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা শত শত রোগী ও তাদের স্বজনদের পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। রবিবার সকালে চিকিৎসকরা কজে যোগ দিলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান তারা। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জরুরি বিভাগে মেডিকেল অফিসাররা তাদের কক্ষ বন্ধ করে দেন, বন্ধ করে দেওয়া হয় জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টার। এরপর থেকেই ঢাকা মেডিকেলের সামনে রোগী ও তাদের স্বজনদের জটলা বেঁধে যায়।
এর আগে, শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে নিউরো সার্জারি বিভাগের তিন চিকিৎসককে মারধরের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় দোষীদের সিসি টিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দেন চিকিৎসকরা। অন্যথায় ২৪ ঘণ্টা পর তারা কর্মবিরতিতে যাবেন বলে ঘোষণা দেন।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, শনিবার খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগ এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হলে ওই ঘটনায় আহত এক গ্রুপ চিকিৎসা নিতে ঢাকা মেডিকেলে আসে। পরে অপর একটি গ্রুপ চাপাতি নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভেতরে ঢুকে পড়ে। একপর্যায়ে চারজনকে আটক করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করা হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আব্দুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, আজ সকাল থেকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা নিরাপত্তাহীনতার কারণে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখেছেন। গতকাল একদল বহিরাগত এসে সমস্যা সৃষ্টি করে। তারা অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে চিকিৎসকদের বের করে নিয়ে এসে মারপিট করে।
এর আগে, সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর চিকিৎসায় অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গতকাল হট্টগোল হয়। মৃত শিক্ষার্থীর নাম আহসানুল ইসলাম (২৫)। আহসানুল বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী। ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলে ঢামেকের এক চিকিৎসককে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ঢামেকে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক