তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, আমরা আমলাতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার উপর অভ্যস্ত হয়ে গেছি। আমলাদের নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা নেই, তবে আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে সমস্যা। এ শাসন ব্যবস্থায় ফলাফল কি হলো তার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় পদক্ষেপ নেয়া হলো কি না। পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় কাঙ্খিত ফলাফলের জন্য। কিন্তু ফলাফলের দিকে কেউ নজর দেয় না। আমি একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে বরাদ্দ দিলাম রোগীর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। রোগীরা সন্তুষ্ট কি না আমরা সেই দিকে খেয়াল রাখি না, বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে কি না সেদিকে আমাদের নজর বেশি।
শনিবার সকালে নগরীর ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে শহীদ আবু সাঈদ হেলথ ক্যাম্পের সমাপনী উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, আমাদের দেশে সরকার চালানোর স্টাইল পরিবর্তন হওয়া দরকার। মাঠ বাস্তবতার সাথে আমলাতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার সম্পৃক্ততা কম। আমি মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তো বটেই, ভবিষ্যতে রাষ্ট্র পরিচালনায় যারা থাকবেন, সার্বিকভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে হলে এই স্টাইলের পরিবর্তন আনতে হবে।
তিনি বলেন, অন্তর্বতীকালীন সরকারকে মাঠের সাথে কেন্দ্রের ফাঁক কমিয়ে আনতে হবে। তৃণমূলের সেবা নিশ্চিত করতে হলে মাঠের কথা বেশি শুনতে হবে। আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থার গ্যারাকলে পড়লে দেশে বড় ধরনের সংস্কার সীমাবদ্ধ হতে পারে। সেই সাথে কেতাবী সমাধান দিয়েও দেশ পরিচালিত হতে পারে না। কেতাবী সমাধান ও আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থা দুটোই দেশের জন্য বিপদ। এটি থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। এক ধরনের নিষ্ঠুর, দুর্নীতি পরায়ন শাসন ব্যবস্থা আমরা দেখেছি। নতুন বাংলাদেশে সংস্কার আনতে হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারসহ সকলকে জবাবদিহিতারও আওতায় থাকতে হবে।
এ সময় তিনি বলেন, আবু সাঈদের আত্মত্যাগ নতুন বাংলাদেশ গড়ার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছি। আমরা তার স্মরণে আবু সাঈদের জন্মভিটা জাফরপাড়া কামিল মাদ্রাসা মাঠে দুই দিনব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প করেছি। সেখানে প্রায় দুই হাজার মানুষকে বিভিন্ন রোগের ব্যবস্থাপত্র ও ঔষধ দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ কার্যক্রম চলমান থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের কর্মসূচি সমন্বয়ক জাহিদুল ইসলামসহ জেলার প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল