ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

‘২০২৫ সালের মধ্যে ৫১,৩০০টি কৃষি যন্ত্র কৃষকদের কাছে সরবরাহ করবে সরকার’
গাজীপুর প্রতিনিধি

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এর সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, কিশোরগঞ্জ এর আয়োজনে ‘হাওরাঞ্চলের উপযোগী বারি উদ্ভাবিত কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার’ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

গতকাল শনিবার কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায় এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। 

বারি’র আওতাধীন ‘কৃষি যন্ত্রপাতি ও লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন ব্যবস্থাকে অধিকতর লাভজনক করা (এফএমডিপি)’ শীর্ষক প্রকল্পের অর্থায়নে আয়োজিত এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম। 

বারি’র পরিচালক (পরিকল্পনা ও মূল্যায়ন) ড. অপূর্ব কান্তি চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ), সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সাবিহা পারভীন, বারি’র মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ঢাকা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক এস এম সোহরাব উদ্দিন, নিকলী উপজেলা চেয়ারম্যান এ. এম. রুহুল কুদ্দুস ভূঞা (জনি), নিকলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. শাকিলা পারভীন। 

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বারি’র ফার্ম মেশিনারী এন্ড পোস্টহারভেস্ট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং (এফএমপিই) বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রধান ড. মো. আইয়ুব হোসেন, বারি’র এফএমপিই বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ এরশাদুল হক, বারি’র সরেজমিন গবেষণা বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মাজহারুল আনোয়ার। 

অনুষ্ঠানে বারি উদ্ভাবিত হাওর অঞ্চলের উপযোগী কৃষি যন্ত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয় এবং অতিথিবৃন্দ এ প্রদর্শনীর স্টল পরিদর্শন করেন।

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার পেছনে হাওরবাসীর অনন্য অবদান রেখে চলেছে। দেশে মোট উৎপাদিত বোরো ধানের শতকরা ২০ ভাগ আসে এই হাওরাঞ্চল থেকে। হাওরের যেমন চ্যালেঞ্জ আছে তেমনি সম্ভাবনাও রয়েছে। দেশের বৈরী প্রতিবেশের চ্যালেঞ্জকে সম্ভাবনায় রূপান্তর করার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ে ইতোমধ্যে ৬টি হট স্পট চিহ্নিত করেছে যার অন্যতম হলো হাওর। 

তিনি বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে তাল মিলিয়ে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টিতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে হলে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ অপরিহার্য। বর্তমানে দেশে বিভিন্ন কারণে কৃষি শ্রমিকের সংকট সৃষ্টি হচ্ছে এবং এ ধারা অব্যাহত থাকলে কৃষি উৎপাদন ঝুকির মুখে পড়বে। তাই কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে কৃষি শ্রমিকের সংকট মোকাবেলা করে কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে। 

কৃষি সচিব বলেন, ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে সরকার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে ৫১,৩০০টি কৃষি যন্ত্র সারাদেশের কৃষকদের কাছে সরবরাহ করবে। হাওরাঞ্চলের কৃষকের জন্য সরকার বিশেষ উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করছে যার মাধ্যমে কৃষক উপকৃত হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, হাওর অঞ্চলে অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো দ্রততম সময়ের মধ্যে বোরো ধান উঠানো বা কর্তন করা। স্বল্প সময়ের মধ্যে বোরো ধান উঠাতে না পারলে পাহাড়ী ঢলে ধান তলিয়ে যায় এবং কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়। পূর্বে কৃষি যন্ত্র না থাকায় হাওরে বোরো ধান উঠাতে অনেক সময় লাগতো এবং বন্যায় কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হতো। বর্তমান সরকার বিশেষ করে মাননীয় কৃষি মন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় কৃষক এখন কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে দ্রুততর সময়ের মধ্যে হাওরের ধান উঠাতে সক্ষম হচ্ছে।

এর আগে সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, কিশোরগঞ্জে ‘ভাসমান কৃষির আধুনিক প্রযুক্তির উপর প্রশিক্ষণ ও কৃষক সমাবেশ ২০২২’ অনুষ্ঠিত হয়। ‘ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ গবেষণা সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ প্রকল্প (বারি অংগ)’ এর অর্থায়নে আয়োজিত আয়োজিত এ প্রশিক্ষণ ও কৃষক সমাবেশের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উদ্বোধন করেন কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন



এই পাতার আরো খবর