ঢাকা, বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য: সমাবেশে হুম্মাম কাদেরের শাস্তির দাবি
অনলাইন ডেস্ক
হুম্মাম কাদের চৌধুরীর বক্তব্যের প্রতিবাদে সমাবেশ করে গৌরব-৭১

যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকার সাকা চৌধুরীর পুত্র হুম্মাম কাদের চৌধুরীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে গৌরব ’৭১। শনিবার বিকাল ৪ টায় শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে এই সমাবেশ থেকে হুম্মাম কাদেরের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানানো হয়।

প্রতিবাদ সমাবেশে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু বলেন, জিয়া ক্ষমতায় আসার পর স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসিয়েছে। পরবর্তীতে খালেদা জিয়াও একই কাজ করেছে। ১৯৮১ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে এসে রাজাকারদের বিচারের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বিএনপি ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিচারের পথ বন্ধ করে রেখেছিল। তারপরেও বঙ্গবন্ধুকন্যা যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসিতে ঝুলিয়েছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধী রাজাকার সাকা চৌধুরীর পুত্র হুম্মাম কাদের চৌধুরীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যে আমি অবাক হইনি। কারণ, রাজাকারের সন্তান তো রাজাকারের মতোই কথা বলবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এসব স্বাধীনতা বিরোধীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম বলেন, এই শাহবাগ দাবি আদায়ের চত্বর। এই চত্বরে দাঁড়িয়ে এর আগে আমরা বলেছিলাম- ফাঁসি, ফাঁসি, ফাঁসি চাই, কাদের মোল্লার ফাঁসি চাই। আজও এই চত্বরে দাঁড়িয়ে বলতে চাই, অবিলম্বে হুম্মাম কাদেরের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার মামলা হওয়া উচিত।

বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচ্ছু জালাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে ক্ষতবিক্ষত করার জন্য যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার সাকা চৌধুরীর পুত্র হুংকার দিয়েছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র জমা দিয়েছি কিন্তু ট্রেনিং জমা দেইনি। কর্মসূচি আয়োজনের জন্য গৌরব ‘৭১-কে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, গৌরব ৭১ সাহসী মায়ের, সাহসী সন্তানদের সংগঠন। এই সংগঠনের দাবি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেনে নিয়ে হুম্মামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানাই।

বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি আসলাম সানি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের একজন সন্তানও বেঁচে থাকতে স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তিকে কখনোই ধৃষ্টতা দেখানোর সুযোগ দেওয়া যাবে না।

বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার বলেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধারা বেঁচে আছি, আমাদের সন্তানরাও বেঁচে আছে। কাজেই কোনো যুদ্ধাপরাধীর সন্তান বাংলাদেশে থাকতে পারবে না। আমি দাবি জানাচ্ছি, আগামী ১০০ বছর কোনো রাজাকারের সন্তান কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারবে না এবং একইসাথে তাদের সন্তানদের কোনো সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।

গৌরব ’৭১ এর সাধারণ সম্পাদক এফ এম শাহীন বলেন, বিএনপির নামে স্বাধীনতা বিরোধীদের যে ফ্রন্ট, তারা ওই মহাসমাবেশে এদেশের স্বাধীনতাকে কলঙ্কিত করেছে। তাদের এই সমাবেশে যুদ্ধাপরাধী রাজাকার সাকা চৌধুরীর পুত্র হুম্মাম কাদের চৌধুরী নারায়ে তাকবীর স্লোগান দিয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের শহিদ বলে আখ্যা দিয়েছে। তার কত বড় স্পর্ধা!

আওয়ামী যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি বলেন, আমরা বাংলাদেশকে ভালোবাসি। অথচ স্বাধীনতার এতো বছর বছর পরেও আমাদের যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর সন্তানদের হুংকার শুনতে হয়। এটা কী ভাবা যায়? 

সভাপতির বক্তব্যে গৌরব ৭১ এর সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান রোমেল বলেন, সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর ছেলের আরবি নাম হুম্মাম কাদের। যার অর্থ বাথরুম ব্যবস্থাপক। একজন বাথরুম ব্যবস্থাপকের মুখ থেকে সর্বোচ্চ কী ধরণের বক্তব্য আমরা আশা করতে পারি!

প্রতিবাদ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি মানিক লাল ঘোষ, বিবার্তা২৪ডটনেটের সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসি, আফসানা ফেরদৌস কেকা, গৌরব গৌরব ৭১ সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম রূপমসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, বিশিষ্ট রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল 



এই পাতার আরো খবর