ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

বাকপ্রতিবন্ধী লাভলী খাতুনের বিয়ে দিলেন জেলা প্রশাসক
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

বাকপ্রতিবন্ধী ও অভিভাবকহীন লাভলী খাতুনকে নীলফামারী থেকে ২০১০ সালে উদ্ধার করেছিল পুলিশ। একই বছর নীলফামারী থেকে তাকে এই সেফহোমে পাঠায়। দীর্ঘ ১৩ বছর থেকে সেফহোমে আছে। শনিবার সংসার জীবনে ফিরলেন অভিভাবকহীন লাভলী খাতুন।

শনিবার বিকেলে বায়া সেফ হোমে বিয়ের আসরের মোনাজাত শেষে এ কথা সাংবাদিকদের বলেন, সেফ হোমের ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।

জেলা প্রশাসক বলেন, এটি একটি মানবিক কাজ। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিয়ের ব্যবস্থা করার অনুমতি প্রদান করা হয়। আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করার জন্য আদালতে তাদের জামিন নিতে হয়। লাভলী খাতুনের সঙ্গে হাবিব পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ হল। বিয়েতে নিজেরা খুশি বলে জানিয়েছেন তারা। অভিভাবকহীন এই নারীর বিয়ে দিতে পেরে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদও খুশি। বিয়েতে অতিথিসহ প্রায় ১০০ মানুষকে দাওয়াত করা হয়েছিল।

এই বিয়েতে অতিথি হিসেবে এসেছিলেন রাজশাহী পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কল্যাণ চৌধুরী, পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) অভিজিত সরকার ও রাজশাহী সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোসা. হাসিনা মমতাজ, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (গোপনীয় শাখা) মো. শামসুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক ড. আব্দুল্লা আল ফিরোজ, সেফাহোমের উপ-তত্ত্বাবধায়ক লাইজু রাজ্জাক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বরের পক্ষ থেকে বরযাত্রী এসেছিলেন আরও প্রায় ২০ জন।

সেফহোম সমাজসেবা অধিদপ্তরের একটি প্রতিষ্ঠান। রাজশাহীর সেফহোমটি পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার বায়া এলাকায় অবস্থিত। শনিবার বিকালে সেফহোমে গিয়ে দেখা গেছে, পবা উপজেলার বায়া সেফহোমে অনেকটা ধুমধামেই বিয়ের আয়োজন হয়েছে লাভলী খাতুন। লাভলী খাতুন বিয়ে করেছেন নগরীর বড়বনগ্রাম দুরুলের মোড় এলাকার মো. হাবিব (৪২)। লাভলী খাতুনের কোনো অভিভাবক নেই। রাজশাহীতে লাভলী খাতুন ছিলেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহিলা ও শিশু-কিশোরী হেফাজতিদের নিরাপদ আবাসনে (সেফ হোম)।

 জানা গেছে, লাভলী খাতুনের বর হাবিবের বয়স ৪২ বছর। তার বাড়ি রাজশাহী নগরীর বড় বনগ্রাম দুরুলের মোড়ে। তিনি রাজশাহী শহরে অটোরিকশা চালান। গত দুই বছর আগে তার আগের স্ত্রী মারা গেছেন। তার তিন ছেলে আছে। তারা এসে বাবার পাশে বসে ছিল। বিয়ের দেনমোহর ঠিক করা হয় ১ লাখ টাকা।

বরের ছেলে মেহেদী হাসান বলেন, বাবার বিয়ের জন্য এমন ভালো একটা মেয়ে পেয়ে খুশি।

সেফাহোমের উপ-তত্ত্বাবধায়ক লাইজু রাজ্জাকসহ সব কর্মকর্তা-কর্মচারী বিয়েবাড়ির সাজে সেজেছেন। 

লাইজু রাজ্জাক বললেন, লাভলী খাতুন নিজের সংসারে সুখে থাকবে এই তার আনন্দ।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত



এই পাতার আরো খবর