ঢাকা, বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

‘ঢাকা শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সম্ভাব্য পথ ও উপায়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

‘জাপান বাংলাদেশ মৈত্রী: ঢাকা শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সম্ভাব্য পথ ও উপায়’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নগর ভবনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সংলগ্ন সভাকক্ষে এ বৈঠকটি যৌথভাবে আয়োজন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এবং ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ল' অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি (আইআইএলডি)।

বৈঠকে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাপানের হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভস এর সদস্য ওসোমু ওনো। সভায় সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) মো. মিজানুর রহমান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা (নির্বাহী প্রকৌশলী) ড. মো. শফীউল্লাহ ও প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা (উপ-সচিব) মো. ইফতিখার আহমাদ চৌধুরী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. রুহুল আমিনের সঞ্চালনায় বৈঠকে মূলবক্তব্য প্রদান করেন ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল' অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি (আইআইএলডি) -এর নির্বাহী পরিচালক শফিউল আলম শাহীন। এছাড়া বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. তাওহীদুল ইসলাম ও গবেষক ড. আব্দুল্লাহ আল মারুফ প্রমুখ।

গোলটেবিল বৈঠকে ওসোমু ওনো বলেন, আমরা বাংলাদেশের শহরগুলো বিশেষ করে রাজধানী ঢাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বেশকিছু চ্যালেঞ্জের কথা জেনেছি। এ  পরিপ্রেক্ষিতে আমরা প্রথমে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং এরপর  ‘বর্জ্য থেকে শক্তি’ অর্থাৎ ‘Waste-to-Energy’ এই পদ্ধতি কেন্দ্র করে কাজ করতে আগ্রহী। এ পদ্ধতিতে বার্নিং টেকনোলজি ব্যবহার করা হবে যা বর্জ্য সেপারেশন করে প্রয়োজনীয় অংশ জ্বালানির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এ ক্ষেত্রে কঠিন বর্জ্য পদার্থ পুড়িয়ে এর পরিমাণ কমিয়ে তাপ, বাষ্প এবং বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এই ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট পদ্ধতির মাধ্যমে শহর পরিবেশ দূষণ থেকে অনেকটা রক্ষা পাবে এবং উৎপাদিত বৈদ্যুতিক শক্তি ব্যবহার করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব হবে। যদি সিটি কর্পোরেশন এদিকে আগ্রহ দেখায় তাহলে আমরা এগিয়ে আসতে পারি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা ড. মো. শফীউল্লাহ ও মো. ইফতিখার আহমাদ চৌধুরী তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সামগ্রিক কর্মসূচি ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে ওসোমু ওনোকে অবহিত করেন। তারা জানান, ইতোমধ্যে জাইকার সহযোগিতায় দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন দুটি দীর্ঘমেয়াদী মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করছে।  জনসচেতনতা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ছিল এ পরিকল্পনার উল্লেখ্যযোগ্য কর্মসূচি। তারা ওসোমু ওনো এর প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে তাদের কর্মপদ্ধতির মডেলসহ আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবনা প্রদানের আহ্বান জানান এবং শহরের সার্বিক কল্যাণের স্বার্থে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রতিও আগ্রহ প্রকাশ করেন।

অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন বলেন, ঢাকা নগরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় যদি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় তাহলে শহুরে মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে। আর জাপান যদি আমাদের সিটি কর্পোরেশনের সাথে কাজ করে তাহলে দুই দেশের সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও এ ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে অর্থায়নের বিষয়টিও সহজ হবে।

সভার মূলবক্তা শফিউল আলম শাহীন বলেন, ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনকে সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে উন্নয়নের পথে এক ধাপ এগিয়ে নিতে চাইলে অন্যান্য পদক্ষেপ বা কর্মসূচিগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। আর যদি বর্জ্য থেকে ইলেকট্রিসিটি উৎপাদন করা যায় তাহলে আমাদের শহরে বিদ্যুতের যে ঘাটতি রয়েছে তার অনেকাংশই স্বল্প খরচ পূরণ করা যাবে। বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অন্যতম রোল মডেল হলো জাপান। এক্ষেত্রে তারা বাংলাদেশকে সহযোগিতা করলে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা সম্ভব।

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল



এই পাতার আরো খবর