ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

শয়ন কক্ষে ব্যাংকের মতো ভল্টে সাড়ে ৭ কোটি টাকার হেরোইন!
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে অভিযান চালিয়ে সাড়ে সাত কেজি হেরোইন, হেরোইন বিক্রির টাকা, ফেন্সিডিল ও স্বর্ণালংকারসহ জিয়ারুল ইসলাম (৩৫) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

সোমবার ভোর পৌনে ৪টার দিকে গোদাগাড়ী পৌর এলাকার আচুয়া কসাইপাড়া গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। 

দুপুরে রাজশাহী জেলা পুলিশ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদকব্যবসায়ী জিয়ারুল ইসলাম গোদাগাড়ী পৌরসভার আচুয়া কসাইপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল লতিফের ছেলে। তিনি নিজের বসতবাড়ির শয়নকক্ষে ব্যাংকের মতো একটি ভল্টে অভিনব কায়দায় সাড়ে ৭ কেজি হেরোইন লুকিয়ে রেখেছিলেন। যার আনুমানিক বাজার মূল্য সাড়ে ৭ কোটি টাকা। একইসঙ্গে সেখান থেকে ১৮ বোতল ফেন্সিডিল, হেরোইন বিক্রির সাড়ে ২৪ লাখ ৫০ হাজার নগদ টাকা এবং ২৫৮ গ্রাম স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের একটি টিম গোদাগাড়ী পৌর এলাকার এক নম্বর ওয়ার্ডের আচুয়া কসাইপাড়া গ্রামে জিয়ারুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানের প্রথম পর্যায়ে মাত্র ৫০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়। পরে অধিকতর তল্লাশির এক পর্যায়ে তার বাড়িতে বিশাল একটা আধুনিক এবং সুরক্ষিত স্টিলের তৈরি ভল্ট পাওয়া যায়। কিন্তু জিয়ারুল চাবি না দেওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় ভল্টটি ভেঙে তার ভিতর থেকে বাকি সাত কেজি হেরোইন, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।

জিয়ারুল দীর্ঘদিন ধরে মাদক চোরাকারবারের সঙ্গে জড়িত বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, সীমান্ত থেকে বাহকের মাধ্যমে হেরোইন এনে বাড়িতে মজুদসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করতো জিয়ারুল। মাদক ব্যবসা করে সে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছে। নিজের মাদক ব্যবসা থেকে অর্জিত অর্থ, স্বর্ণ এবং হেরোইনের নিরাপদ হেফাজতের জন্য সে বছর তিনেক আগে লক্ষাধিক টাকা খরচ করে এই ভল্টটি সংগ্রহ করে। তবে উদ্ধার হওয়া ফেন্সিডিল নিজে সেবনের জন্য রেখেছিল বলে আসামি স্বীকার করেছে।

পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন জানান, গ্রেফতার জিয়ারুল পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী। তার নামে আগেও একটি হেরোইন মামলা আছে। তার সঙ্গে স্থানীয় রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী লোক জড়িত আছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। তারা সীমান্ত থেকে বাহকের মাধ্যমে হেরোইন এনে বাড়িতে মজুদ করে। সুবিধামত সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) সনাতন চক্রবর্তী, গোদাগাড়ী সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার সোহেল রানা, গোদাগাড়ী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলামসহ পুলিশের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাবৃন্দ।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত



এই পাতার আরো খবর