চীনের যে উহান শহর থেকে করোনাভাইরাস মহামারির সূচনা হয়েছিল - সেই শহরটি দুই মাসেরও বেশি সময় অবরুদ্ধ রাখার পর তা আংশিকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, শহরটিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে যাওয়ার কারণেই এই সিদ্ধান্ত।
লোকজনকে শহরের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হলেও কাউকে বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। শহরের রেল স্টেশনে পৌঁছে লোকেরা জানুয়ারি মাসের পর আত্মীয় স্বজনের সাথে এই প্রথম দেখা করতে পারায় আনন্দ প্রকাশ করেছেন।
হুবেই প্রদেশের রাজধানী এই উহান শহরে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন এবং এই রোগে হুবেই প্রদেশে কমপক্ষে তিন হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।
সরকারি হিসেবে দেখা যাচ্ছে, চীনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য ও নাটকীয় হারে কমে গেছে। শুক্রবার সারা দেশে মাত্র ৫৪ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এদের সবাই চীনের বাইরে থেকে এই ভাইরাসটি নিয়ে এসেছেন বলে জানানো হয়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বর মাসে উহান শহরে বন্যপ্রাণীর একটি বাজার থেকে আকস্মিকভাবেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছিল। এর প্রকোপ ঠেকাতে জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে শহরটিকে শুধু চীন থেকে নয়, সারা বিশ্ব থেকেই বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়।
এর পর দু'মাসেরও বেশি এই এখানকার সবকিছু বন্ধ ছিল। ফলে কার্যত বন্দী হয়ে পড়ে শহরের এক কোটি দশ লাখেরও বেশি বাসিন্দা। কিন্তু আজ থেকে শহরটি ধীরে ধীরে খুলে দেওয়া শুরু হয়েছে।
শহরের ১৭টি ট্রেন স্টেশন এবং পাতাল রেলসহ অল্প কিছু যানবাহন চলাচলও শুরু হয়েছে। লোকজনকে শহরে আসতে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এখনও কেউ বের হতে পারছেন না।
এজন্য তাদেরকে আরো দু'সপ্তাহ অর্থাৎ ৮ এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। উহান ছাড়া হুবেই প্রদেশের অন্যান্য শহরও বহির্বিশ্বের জন্যে খুলে দেওয়া হয়েছে।
প্রায় তিন মাস পর উহানে ফিরে এসেছেন ১৯ বছর বয়সী ছাত্র গু লিয়াংকাই। তিনি বলেছেন, তিনি খুব খুশি কারণ পরিবারের সবার সঙ্গে তার আবার দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, সবাইকে আমি জড়িয়ে ধরতে চেয়েছিলাম, কিন্তু এখন যেহেতু খারাপ সময় যাচ্ছে - তাই আমরা এ থেকে বিরত থাকছি।
শুধু মাত্র তাদেরকেই শহরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে যাদের মোবাইলের একটি অ্যাপে সবুজ রঙ দেখা যাচ্ছে। এই সঙ্কেতের অর্থ তিনি সুস্থ আছেন।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
বিডি-প্রতিদিন/ফারজানা