ঢাকা, সোমবার, ২২ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

পুষ্টিক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিতে জানো
অনলাইন ডেস্ক

জয়েন্ট অ্যাকশন ফর নিউট্রিশন আউটকাম বা জানো প্রকল্প সরকারের সহযোগী হিসেবে পুষ্টি কার্যক্রমের সুশাসন নিশ্চিতের লক্ষ্যে কাজ করছে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সহ-অর্থায়নে আছে অস্ট্রিয়ান ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন। এছাড়া এই প্রকল্প বাস্তবায়নে যৌথভাবে কাজ করছে কেয়ার বাংলাদেশ, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও ইকো স্যোশাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও)।

রংপুর এবং নীলফামারী জেলার সাতটি উপজেলার ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী ৪ লক্ষ ২১ হাজার ৪২৫ জন কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে এই প্রকল্পটি কাজ করছে।

এই প্রকল্পে দেশের উত্তরাঞ্চলের দুই জেলার উপজেলাগুলোতে কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক ও মানসিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে পুষ্টি ক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিতের চেষ্টা করা হচ্ছে। কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যের উন্নয়ন, বয়োঃসন্ধিকালীন খাদ্য চাহিদা পূরণ, পুষ্টি চার্ট তৈরি, খাদ্যের পুষ্টিমান সম্পর্কে জানাসহ ঘরে তৈরি খাদ্যগ্রহণকে উৎসাহিত করতে এই প্রকল্পের অধীনে বিদ্যালয় পর্যায়ে তৈরি করা হয়েছে পুষ্টি বাগান। সাত উপজেলার ৩৩১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কৃষি শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক ও জানো প্রকল্পের একজন ভলান্টিয়ারের সহযোগিতায় প্রতিটি বিদ্যালয়ে গড়ে উঠেছে একটি করে পুষ্টি বাগান। এসব বাগানে ছেলে-মেয়েদের কৃষি শিক্ষার সাথে সাথে হাতে কলমে বাগান করা ও বাগান পরিচর্যার মতো বিষয়গুলো শেখানো হয়। শুধু বাগান তৈরিই নয়, বরং বাগানের উৎপাদিত সবজির দ্বারা কীভাবে পুষ্টিকর রান্না করা যায়, তা দেখাতে বিভিন্ন সময় নিজেদের উৎপাদিত সবজি দিয়ে আয়োজন করা হয় “কুকিং ডেমনস্ট্রেশন” যেখানে নানা ধরনের মজাদার ও পুষ্টিকর খাবার রান্না পদ্ধতি হাতে কলমে শেখানো হয়। এই কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রাপ্ত জ্ঞান নিজেদের পারিবারিক জীবনেও প্রয়োগ করছে। এর ফলে দেশের একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে সরকারের পুষ্টিনীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই ক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিতের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

নীলফামারীর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “আমি নিজে এই প্রকল্পের পুষ্টি বাগান, কারাতে প্রশিক্ষণ দেখেছি, যা ছেলেমেয়েদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করছে। এই প্রকল্পের কাজের প্রভাব অন্যান্য বিদ্যালয়েও পড়ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এই প্রকল্পের পুষ্টি কার্যক্রমের ফলাফল জাতীয় পর্যায়ে পাঠানো হচ্ছে”।

রংপুর জেলা শিক্ষা উপ-পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, “এই প্রকল্প থেকে যারা শিক্ষা নিচ্ছে তা পরবর্তী প্রজন্মের পুষ্টি ও মেধাবিকাশে সাহায্য করবে। এই প্রকল্পের ইতিবাচকতা সরকারকে দেশের অন্যান্য ক্ষেত্রেও এমন নীতি গ্রহণে সহয়তা করবে”।

পুষ্টিক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিতকরণ সম্পর্কে জানো প্রকল্পের মাল্টিসেক্টরাল গভর্নেন্স ম্যানেজার গোলাম রাব্বানী বলেন, “কৈশোরকালীন পুষ্টি নিশ্চিতকরণে সরকার কর্তৃক প্রণীত নীতিমালা বাস্তবায়নে সরকারের সাথে সমন্বয় করে এগিয়ে যাওয়াই আমাদের মূল কাজ। এক্ষেত্রে তৃণমূল পর্যায়ে আমরা ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে গঠিত সমন্বয় কমিটি ও উচ্চপর্যায়ে বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি কাউন্সিলের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ ও সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে জাতীয় লক্ষ্যপূরণে আমাদের কার্যক্রমগুলো পরিচালিত হচ্ছে”।

এভাবে, স্কুল ইন্টারভেনশন কার্যক্রমের মাধ্যমে জানো প্রকল্প স্থানীয় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের ২য় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা ২০১৬-২০২৫ বাস্তবায়নে সরকারকে সহায়তা করে যাচ্ছে। পুষ্টিক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করা এই প্রকল্পের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য বলেই জানো-কে পুষ্টি প্রকল্প না বলে উল্লেখ করা হয় পুষ্টি সুশাসন নিশ্চিতকরণ একটি প্রকল্প হিসেবে।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা/মামুন



এই পাতার আরো খবর