ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

কারাগারের খাদ্য বিষক্রিয়ায় অসুস্থ অর্ধশত, হাসপাতালে ভর্তি ১৯

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে সরকারিভাবে উন্নত মানের খাবার খেয়ে বাগেরহাট জেলা কারাগারের অর্ধশত বন্দী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। গুরুতর অসুস্থ বন্দীদের মধ্যে আজ মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ১৯ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। কারাগারের অভ্যন্তরে একটি মেডিকেল টিম ঢুকে অসুস্থদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এঘটনার খবর পেয়ে ডিআইজি (প্রিজন) একেএম ফজলুল হক যশোর থেকে বাগেরহাটে আসেন।

এদিকে, খাদ্য বিষত্রিুয়ায় আক্রান্ত বন্দীদের চিকিৎসায় স্থান সংকুলন না হওয়ায় ডায়রিয়া ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন শিশুসহ অন্য রোগীরা বেড দিতে বাধ্য হয়েছেন। বন্দীরা অসুস্থ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তাদের স্বজনেরা হাসপাতাল ও কারাগারের সামনে ভিড় করছে।

বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অসুস্থ বন্দীরা হলেন: জালাল হোসেন, হেদায়েত, মনির হাওলাদার, এমদাদুল, নজরুল হাওলাদার, হীরামনি, মাহাতাব খান, মুক্তামীর, জাহিদুল, মিন্টু, মিজান, হেমায়েত হোসেন, মজিবর ফরাজী, আব্বাস শেখ, গোপাল চন্দ্র পাইক, ইমাদুল, আবুবক্কর, কামাল ও রাসেল।

অসুস্থ কয়েকজন বন্দীরা বলেন, রাতে পোলাও এবং গরুর মাংস খেয়ে এশার নামাজের পর পেটের ব্যথা শুরু হয়। এরপর শুরু হয় বমি ও পাতলা পায়খানা। এতে প্রায় অধিকাংশ বন্দী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় দায়িত্বরত কারারক্ষীদের জানানো হলেও রাতে জেলার বা সুপার কেউ তাদের দেখতে আসেননি।

বাগেরহাট জেলা কারাগারের সুপার আমানুল্লাহ জানান, গতকাল সোমবার বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বাগেরহাট জেলা কারাগারে সরকারিভাবে  উন্নতমানের খাবর পরিবেশন করা হয়। সকালে পান্তা ইলিশ, দুপুরে আলুর দম এবং রাতে ৫২৯ জন বন্দীকে  রান্না করা গরুর মাংস-পোলাও পরিবেশন করা হয়। রাতের খাবারের পর বেশকিছু বন্দীর পেটের পীড়া ও ডায়রিয়াসহ নানা উপসর্গ দেখা দেয়। এ অবস্থায় আজ সকালে অসুস্থদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় ১৯ বন্দীকে চিকিৎসার জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি আরও জানান, কারা অভ্যান্তরে অসুস্থ বন্দীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

বাগেরহাট সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. কুহেলী বেগম জানান, প্রাথমিকভাবে খাবারে বিষক্রিয়ার ফলেই এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এপর্যন্ত ১৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে জেল সুপার খাদ্যে বিষক্রিয়ায় বিষয়টি অস্বীকার করেন, তিনি জানান তাদের নিজস্ব গভীর নলকূপের পানি খুব লবণাক্ত, সুপেয় পানির তীব্র অভাব রয়েছে। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই লবণাক্ত পানি পান করার কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে।

বাগেরহাট সিভিল সার্জন ডা. বাকির হোসেন জানান, বাগেরহাট জেলা কারাগারে খাদ্য বিষক্রিয়ায় অসুস্থ্য বন্দীদের উন্নত চিকিৎসা দিতে দুটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি মেডিকেল টিম বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি ১৯ বন্দীকে ও ৪ সদস্য বিশিষ্ট মেডিকেল টিম কারা অভ্যন্তরে অসুস্থ বন্দীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।



এই পাতার আরো খবর