নাটোরের লালপুরের গোপালপুর পৌরসভার বিজয়পুর মধ্যপাড়া এলাকায় এক প্রবাসীর স্ত্রী ও তিন সন্তানের জননীকে ধর্ষণের বিচার হিসেবে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মো. আসাদুল ইসলাম অভিযুক্ত ধর্ষককে ১০ বার জুতার বারি ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। তবে, গোপনসূত্রে জানা গেছে, ওই কাউন্সিলর ধর্ষককে কোনরকম শাস্তি দিয়ে রক্ষা করবেন শর্তে ৫০ হাজার টাকা গোপনে ধর্ষকের পরিবারের কাছ থেকে নিয়েছেন। শুক্রবার বিকেলে ধর্ষণের শিকার ওই প্রবাসীর স্ত্রীর বাড়িতে অনুষ্ঠিত এক গ্রাম্য শালিসে ধর্ষককে এই শাস্তি প্রদান করা হয়।
স্থানীয় গ্রাম্য মাতব্বর মো. ফজলুর রহামান জানান, পূর্ব পরিচয় থাকা পাশ্ববর্তী কদিমচিলান পালোহারা গ্রামের বজলু প্রামাণিকের ছেলে তুষার ইসলাম (২০) রাত ১০টার দিকে প্রবাসীর স্ত্রীর বাড়িতে এসে বিদেশ থেকে স্বামীর পাঠানো কিছু টাকা দিয়ে চলে যায়। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পর তুষার পুণরায় ফিরে এসে বলে আরও কিছু টাকা আছে ভুলে দেয়া হয়নি। এ কথা শুনে ওই গৃহবধূ দরজা খুললে ঘরের ভিতর প্রবেশ করে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তুষার তাকে ধর্ষণ করে। এসময় গৃহবধূ শব্দ করার চেষ্টা করলে ও ধস্তাধস্তির শব্দে আশেপাশের লোকজন টের পেয়ে ধর্ষককে আটকে গণধোলাই দেয়। পরের দিন সকালে গ্রাম্য শালিসের ব্যবস্থা করলে সেখানে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর পিতা-মাতা বা অভিভাবকের উপস্থিত থাকার সিদ্ধান্ত হয়। পরে বিকেলে সকলের উপস্থিতিতে বিচার কার্য্য অনুষ্ঠিত হয়। ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর পরিবারের লোকজন জানান, এই বিচারে তারা সন্তুষ্ট নন। অপরদিকে থানা পুলিশকে জানালে গ্রাম্য মাতব্বরা তাদের মেয়েকে তালাক দিবে বলে ভয় দেখাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে তারা নিরূপায় হয়ে এই বিচার মেনে নিয়েছেন। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ধর্ষক তুষারের এক ঘনিষ্ট আত্মীয় জানান, পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসাদুল ইসলাম এটা ধর্ষণ নয় পরকীয়া সম্পর্ক এমন বিষয় তুলে ধরে বিচারে সামান্য শাস্তি প্রদান করবেন শর্তে গোপনে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন।
এদিকে ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূ জানান, তার প্রতি গ্রাম প্রধানেরা অবিচার করেছেন।
এ ব্যাপারে কাউন্সিলর আসাদুল ইসলাম গোপনে টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, সকল গ্রাম প্রধানদের উপস্থিতিতে এই বিচার করা হয়েছে। লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু ওবায়েত জানান, এই ঘটনা তার জানা নাই। তবে অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার