ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

বিলুপ্তির পথে খেজুরের রস সংগ্রহ করা গাছিদের পেশা
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় বিলুপ্ত হতে চলেছে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা গাছিদের পেশা। এখন আর তেমন চোখে পড়ে না খেজুর গাছ থেকে রস বের করা বিশেষ পেশার মানুষ গাছিদের। 

২৫-৩০ বছর আগেও এলাকার প্রায় প্রতিটি গ্রামে বা মহল্লায় গাছিদের দেখা যেত খেজুর গাছের মাথার দিকে বিশেষ কায়দায় কান্ড ছেটে হাড়ি পাততে। শীতের সকালে রোদে বসে খেজুরের রস এবং মুড়ি খাওয়া ছিল গ্রামের একটি রেওয়াজ ও ঐতিহ্য। কৃষকেরা ঘুম থেকে ওঠে খেজুরের রসের সাথে মুড়ি দিয়ে খেয়ে মাঠে যেত, যেটা এখন আর  তেমন দেখা যায় না। 

এক সময় বোয়ালমারী রেল স্টেশনে সকাল হলেই বসত রস ও গুড়ের হাট। দূরদুরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে গুড় কিনে নিয়ে যেত দেশের উত্তরা লের রাজশাহী, নাটোর, কুষ্টিয়া ,দিনাজপুরসহ বিভিন্ন এলাকায়। তখন এক কেজি গুড়ের দাম ছিল ৩০-৪০ টাকা। বর্তমানে বাজারে এক কেজি গুড়ের দাম চারশ টাকা। একমাত্র গুড় বিক্রি করেই চলতো গাছিদের সংসার। দুপুর হলেই গাছিরা হাড়ি কাধে নিয়ে ছুটে যেত গ্রামের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় খেজুর গাছ কাটতে। এখন আর দেখা মেলে না গাছিদের। ৮-১০টি গ্রাম ঘুরলেও একজন গাছি পাওয়া দুষ্কর। 

গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ঘুরতে গিয়ে উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের কয়ড়া গ্রামের জয়বাংলা মোড়ে সানাল মুন্সি নামের একজন গাছিকে খেজুর গাছে হাড়ি নিয়ে উঠতে দেখা গেল। পরে তার সাথে কথা হলে জানান যে, তিনি ২০ বছর বয়স থেকে  খেজুর গাছ কাটা শুরু করেছিলেন। বর্তমানে তার বয়স ৬০ বছর। তার বাবাও একজন গাছি ছিলেন। 

তিনি আরও বলেন, আগের মত এলাকায় খেজুর গাছ নেই। যার কারণে গাছিরা খেজুর গাছ কাটা বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি অল্প কয়েকটি গাছ কাটেন। তাতে প্রতিদিন পাঁচ থেকে সাতশ টাকা আয় হয় যা দিয়ে চলে তার সংসার। সংসারে তিন ছেলে, দুই মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছেন। পরিবার নিয়ে অনেক কষ্ট হয় এ পেশায় থেকে সংসার চালাতে। 

 

বিডি প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ 



এই পাতার আরো খবর