ঢাকা, বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

হেলিকপ্টারে সালিশে এসে জনরোষের মুখে আসক’র প্রতিনিধিদল
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
হেলিকপ্টারযোগে সালিশে আসেন আসক ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিদল।

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় হেলিকপ্টারযোগে বিবাদীর বক্তব্য শুনতে এসে হাস্যরসের জন্ম দিয়েছেন ঢাকার আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিদল। আসক ঢাকা বিভাগীয় প্রধান মুহম্মদ লোকমান হোসেন সাঈদীসহ তার সাথে থাকা কয়েকজন স্থানীয়দের তোপের মুখেও পড়েন। এতে পূর্বনির্ধারিত গাড়ি বহরের সম্মাননাও ভেস্তে যায়।

ঢাকা থেকে হেলিকপ্টরযোগে নামার পরপরই উপস্থিত সংবাদিকদের প্রশ্নে হতবিহ্বল হয়ে পড়েন আগতরা। শনিবার উপজেলার আন্দুলবাড়িয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, উপজেলাধীন আন্দুলবাড়িয়া বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। তিনি দেড় শতাধিক ট্রাক, বেশ কয়েকটি ইটভাটার মালিকসহ বহুমুখী ব্যবসায়ী। ২০-২২ বছর আগে তিনি প্রথম স্ত্রী রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। একই বাড়িতে দুই স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন তিনি।

কিছুদিন ধরে প্রথম স্ত্রীর তিন ছেলের সাথে বাবা আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের বিরোধ দানা বাধে। একই বাড়িতে থাকার পরিবেশ নেই বলেও অভিযোগ তোলেন ছেলেরা। বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে কয়েক দফা বৈঠকের পর গত ১১ অক্টোবর চুক্তিনামায় সম্মত হয়ে উভয়পক্ষ স্বাক্ষর করেন।

ছেলেদের ৩০টি ট্রাকসহ কয়েকটি ব্যবসার কর্তৃত্বও লতিফ বিশ্বাস দেন। ওই চুক্তিপত্র মোতাবেক উভয়পক্ষ চলছিলেন। হঠাৎ ছোট ছেলে মোস্তফা তাজওয়ার ও তার মা আসক ফাউন্ডেশনে আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিবাদীর বক্তব্য শোনার জন্য দিন ও স্থান নির্ধারণ করে আব্দুল লতিফকে নোটিশ দেয় আসক ফাউন্ডেশন।

আসক ফাউন্ডেশনের ঢাকা জোনের সহকারী বিভাগীয় প্রধানসহ চারজন শনিবার দুপুর ১২টার পরপরই হেলিকপ্টারযোগে এসে আন্দুলবাড়িয়া বিদ্যালয় মাঠে নামেন। দলনেতা লোকমান হোসেন সাঈদী নিজেকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার অধীন আইন সহায়তা কেন্দ্র ফাউন্ডেশনের ঢাকা বিভাগীয় প্রধান বলে পরিচয় দেন।

আর অন্য তিনজনের মধ্যে কেএম আবদুল মোমেন সিরাজী নিজেকে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডের উপস্থাপক, মাসুম বিল্লাহ আইন সহায়তা কেন্দ্র ফাউন্ডেশনের সহকারী প্রধান ও আলতাফ হোসেন অতিরিক্ত বিভাগীয় প্রধান হিসেবে পরিচয় দেন।

হেলিকপ্টার থেকে নামার পরই সাংবাদিকদের প্রশ্নে কিছুটা বেসামাল হয়ে পড়েন আকস প্রতিনিধিদল। একেক সময় একেক জবাবে স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে হাস্যরসের খোরাক জন্মায়। পরে আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের বাড়ি সংলগ্ন কার্যালয়ে পৌঁছান।

প্রতিনিধিদলের নোটিশ ও অভিযোগকারীদের অভিযোগের অমিল বিষয়ে সাংবাদিক, আইনজীবী ও জনপ্রতিনিধিরা প্রশ্ন তুললে জবাব দিতে ব্যর্থ হন প্রতিনিধিদল। এসময় স্থানীয়রা চরম সমালোচনা করেন আগতদের। অবশেষে সাংবাদিক-জনতার তোপের মুখে কথিত মানবাধিকার সংস্থার নেতৃবৃন্দ স্থান ত্যাগ করে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন।

জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় সামান্য একটি বিষয় নিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে আইন সহায়তা কেন্দ্রের নামে এখানে আসা ঠিক হয়নি। পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠেছিল। কিন্তু পুলিশের তৎপরতায় সেটা হয়নি।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর