ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

সান্তাহারে ইট বাঁধা সিগন্যাল বাতি নিয়ন্ত্রণ করে রেল চলাচল
নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

রেললাইনের ওপর বাজার, ইট ঝুলিয়ে নড়বড়ে সিগন্যাল সচল রাখা, ৩২টির মধ্যে ১৬টিতেই নেই নিরাপত্তাকর্মী ও গেট। ফলে নিত্যদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। বগুড়ার সান্তাহার থেকে উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের ৭০ কিলোমিটার রেলের এমন অব্যবস্থাপনা চলছে বছরের পর বছর।

রেলের ভগ্ন অবকাঠামো সংস্কারসহ শূন্য লোকবল পূরণের দাবি স্থানীয়দের। তবে রেল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সমস্যা চিহিৃত করে সমাধানের চেষ্টা চলছে।

দীর্ঘদিন ধরে সান্তাহার রেল জংশনের ঢাকামুখী আউটার সিগন্যালটি নষ্ট। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এনেও কাজ হয়নি। তাই নিরাপত্তা নিশ্চিতে রেল কর্মচারীরাই নিজস্ব প্রযুক্তিতে কয়েকটি ইট ঝুলিয়ে সিগন্যালটিকে কার্যকর রেখেছেন।

সান্তাহার-নাটোর রেলপথের তারাপুর এলাকায় এই সিগন্যাল বাতির অদূরেই অরক্ষিত রেলগেট। নেই কোনো গেট ব্যারিয়ার। ফলে বিভিন্ন যানবাহন পারাপারে হরহামেশায় ঘটছে দুর্ঘটনা।

মো. ইয়াকুব আলী তারাপুর গেট ব্যারিয়ারের গেটম্যান হিসেবে আছেন গত দেড় বছর ধরে। তিনি বলেন, এখানে গেট ব্যারিয়ার নেই। তাই খুব সমস্যা হয়। মাঝে মধ্যে ট্রাক্টরসহ বিভিন্ন যানবাহন চলে আসে। তারা বুঝতে পারে না ফলে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, আধুনিক যুগে সিগন্যাল ইট দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এটা বিশ্বাস করা যায় না। তারপরও বাস্তবতা এখানে চলছে গত প্রায় আড়াই বছর ধরে।

এদিকে, সান্তাহারে রেললাইনের ওপর চলে ক্রেতা-বিক্রেতার সরব কারবার। গত ৬ মাসে রেলের চাকায় প্রাণ গেছে ২৪ জনের। সতর্ককতা না মানায় অপমৃত্যু কমানো যাচ্ছে না বলে মনে করছেন পুলিশ কর্মকর্তা।

সান্তাহার জিআরপি থানার ওসি মো. মনজের আলী বলেন, বার বার নির্দেশ দেওয়া হয় এসব দোকান দূরে করার জন্য। কিন্তু তারা মানছেন না। ফলে সমস্যা বাড়ছে, সেই সাথে থাকছে ঝুঁকি।

সান্তাহার রেলজংশনের স্টেশন মাস্টার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, দুর্বল অবকাঠামো পূরণে আশ্বাস পেলেও বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

দেশের প্রাচীনতম রেল জংশনের একটি সান্তাহার। এখান থেকে জয়পুরহাট ও নাটোরের ৭০ কিলোমিটার জুড়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে রেল। এই পথের ৩২টির মধ্যে ১৬টিতেই নেই নিরাপত্তাকর্মী ও গেট। এই জংশন দিয়ে প্রতিদিন ২৫টি ট্রেন চলাচল করে।

নিরাপদ বাহন হিসেবে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছেই রেল পছন্দের। কিন্তু এ বাহনে অন্তহীন সমস্যার মাঝে কিছু মানুষের দায়িত্ব গাফিলতির কারণে মাঝে মধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। রেলকে জনবান্ধব ও আধুনিক সেবানির্ভর করতে এ খাতে আরো বেশি নজর দেওয়ার দাবি বিশিষ্টজনদের।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর