ঢাকা, শুক্রবার, ১ নভেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

পঞ্চগড়ে মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা ও পুষ্টি বাড়ানোর জন্য গবেষণা
পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ের মাটি অম্লীয় প্রধান। এই এলাকায় বছরে বেশ কয়েকটি ফসল উৎপাদিত হয়। এই কারণে মাত্রাতিরিক্ত সার প্রয়োগ করতে হয় চাষিদের। তাই মাটির পুষ্টি কমে যাওয়ার কারণে উৎপাদিত ফসলে কমে যাচ্ছে পুষ্টির মাত্রা। 

চাহিদা এবং উর্বরতা অনুযায়ি নির্ধারিত সার ব্যবহারের বিষয়ে চাষিরাও সচেতন নয়। এর ফলে দিন দিন কমে যাচ্ছে মাটির স্বাস্থ্য ও পুষ্টি। খরচও বেড়ে যাবার কারণে লাভ কম হয় চাষিদের। দীর্ঘদিন পর মাটির অবস্থা পনুবিক্ষন করে মাটির স্বাস্থ্য ঠিক রেখে উর্বরতা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনুযায়ি কি ধরনের সার ব্যবহার করা প্রয়োজন এই বিষয়ের উপর গবেষণা করছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। 

গবেষণায় ভালো ফলাফলও পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের পিএইচডি ফেলো শিক্ষার্থী রুবিনা ইয়াসমিন। তিনি তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের হাওয়া জোত এলাকায় পরিক্ষণ প্লট স্থাপন করে এই গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। 

পরিক্ষণ প্লটে গম ও সরিষা আবাদ করা হয়েছে। এর আগে ওই জমিতে সালফার, ম্যাগনেশিয়ম, বোরন এবং উর্বরতার মাত্রা নির্ণয় করা হয়। পরে প্রয়োজন অনুযায়ি সার প্রয়োগ করে গম ও সরিষার বীজ ফেলা হয়। 

বর্তমানে আশে পাশের অন্যান্য কৃষি জমিতে লাগানো গম ও সরিষার আবাদ থেকে পরিক্ষণ প্লটের গাছগুলোর ফলন দ্বিগুণ হয়েছে। রুবিনা ইয়াসমিন জানান চাষিরা অনেকসময় অযথা বেশী পরিমাণে সার প্রয়োগ করেন। যে সারের দরকার তা ব্যবহার করেন না। এ অঞ্চলের জমিতে কি কি ধরণের সার প্রয়োজন হবে আমি সে বিষয়েই গবেষণা করছি। সঠিক মাত্রায় সার প্রয়োগ করে কৃষক যেন অর্থনৈতিক ভাবে লাভজনক ফসল উতপাদন করতে পারেন তাই গবেষণার উদ্দেশ্য। 

গত তিন বছর থেকে এ গবেষণা চলছে। এ জন্য ২০১৮ সালে মাটি সংগ্রহ করা হয়। ওই এলাকার চাষি সিরাজুল ইসলাম গবেষণার জন্য জমি দিয়েছেন। তিনি জানান, 'গবেষণা প্লটের সরিষা ও গমের আবাদ ভালো হয়েছে।' বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে বাংলাদেশের পঞ্চগড় এবং ময়মনসিংহ এলাকায় এই গবেষণা কার্যক্রম চলছে। 

প্রকল্পের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল আবেদিন জানান, 'বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ ধান গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার রিসার্চ ইন্সটিটিউট এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে এই গবেষণা কার্যক্রম তত্বাবধান করছে। 

গবেষণায় ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে। গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদী কৃষি উন্নয়নে সার প্রয়োগে একটি নতুন দিক উম্মোচন হবে। 

 

বিডি প্রতিদিন / অন্তরা কবির 



এই পাতার আরো খবর